রাজশাহী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পশ্চিমমুখী করা হোক-মোস্তাফিজুর রহমান

দীর্ঘ দীর্ঘ দিনের চাওয়া এখন বাস্তবায়ন হচ্ছে। মনে হচ্ছিল কিছু বাধা অতিক্রম করতে সময় লাগবে। কিন্তু ফুৎকারে উবে গেছে। ম্যাজিকের মত সােনাদীঘির পশ্চিম পাড়ের ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড সার্ভে স্কুলের পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনসমূহ ভেঙ্গে সরিয়ে ফেলা হয়েছে বিদ্যুৎ গতিতে এখন সুন্দর চতুষ্কোণ জায়গা দৃশ্যমান ।

উত্তর ও পশ্চিমে চওড়া রাস্তার ধারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেষ্টিত জায়গায় রাজশাহী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মাথা উচু করে দাড়ানাের দ্বারপ্রান্তে । সােনাদীঘির ধারে অবস্থিত হওয়ায় পূর্ব দিকে অবারিত আকাশের উপস্থিতি দ্বেদীপ্যমান উজ্জ্বল । দক্ষিণ দিকে বেঢপ বাণিজ্যিক ভবন আকাশ ঢেকে বিষফোঁড়ার মত দাঁড়িয়ে আছে । উত্তর – পশ্চিম দিকে ভবনের সারি । শহরের মাঝে অবস্থিত হওয়ার পরেও পূর্ব দিকে সােনাদীঘির কল্যাণে অবারিত আকাশের উপস্থিতি । সে কারণে শহীদ মিনার সোনাদীঘি পাড়ে পশ্চিমমুখা করে নির্মাণ যুক্তিসঙ্গত হবে । মিনার , বেদী উত্তর – দক্ষিণে বিস্তৃত হবে । ফলে অনেক মানুষ এক সঙ্গে শহীদ মিনার বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করতে পারবে ।

জনতার ঢল আসতে পারবে পূর্ব – পশ্চিম উত্তর – দক্ষিণ দিক থেকে । শহীদ মিনার চত্বরে অবস্থিত প্রাচীন গাছগুলাের গোড়া বাধিয়ে গেট । ১ তুর মনােরমভাবে সাজিয়ে তুলতে হবে । চারদিক থেকে আগত প্রতিবন্ধী , বিশেষ করে হুইল চেয়ার ব্যবহারকারীগণ নিজেরাই যেন সারি বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য দিতে পারে সে জন্য ব্যাস্পসহ রাস্তা নির্মাণ করতে হবে । যা হবে বাংলাদেশে প্রথম । গােড়া বাধানাের ফলে চত্বর জুড়ে বসার জায়গা হবে । গাছগুলাে সংরক্ষণ হবে ।

এ ছাড়াও জায়গা বুঝে বুঝে চত্বরে শিউলি ও বকুল গাছ লাগাতে হবে । শিউলি ফুল ও বকুল ফুল কুড়ানাে হবে বাড়তি আকর্ষণ । তাছাড়াও শহীদ মিনারের উত্তর ও দক্ষিণে পলাশ গাছ লাগাতে হবে । এর বাড়তি চত্বরে কৃষ্ণচূড়া ও রাধাচূড়ার সমারােহ ঘটাতে হবে । ফুলে ফুলে ছেয়ে ফেলতে হবে শহীদ মিনার চত্বর । শহীদ মিনার বেদীর তিন ধরে ( উত্তর – দক্ষিণ – পশ্চিম ) লাগােয়া মৌসুমী ফুলের বেড় রাখতে হবে ।

শুধু দিবস পালনে সীমাবদ্ধ না রেখে শহীদ মিনার চত্বরকে সারা বছর কর্মকাণ্ড পরিচলনায় কেন্দ্রে পরিণত করতে হবে । সে জন্য শহীদ মিনার চত্বরের দক্ষিণ ঘেঁষে বাণিজ্যিক ভবন লাগােয়া পূর্ব – পশ্চিমে বিস্তৃত একতলা ভবন নির্মাণ করতে হবে । সেখানে থাকবে পাঠাগার ও মিউজিয়াম । ভরে রাখতে হবে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও চলমান কর্মকাণ্ডের বইপত্র ও ছবিতে ।

র সামনেই তৈরী করতে হবে দেশের প্রথম শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ এর অবিকল প্রতিকৃতি । এই ভবনের পূর্ব প্রান্তে রাখতে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান , নাটক গম্ভীরা যাত্রাপালার প্রস্তুতির জন্য অালাদা ঘর । রাজশাহী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে গড়ে তুলতে হবে ৩৬৫ দিনের সক্রিয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে । আলাপ – আলােচনা , সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড , আন্দোলন , বিভিন্ন মত প্রকল্পের অবারিত স্থান হিসাবে । দেশকে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের ধারায় প্রবাহিত করার অগ্নিগর্ভ স্থান হিসাবে ।