রাজশাহী অঞ্চলে সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি হচ্ছে না কোথাও

রাজশাহী অঞ্চলে হিমাগার ও হাটবাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান সত্ত্বেও সরকার নির্ধারিত দরে আলু বিক্রি হচ্ছে না। পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও জেলার কোথাও এ দরে আলু কিনতে পারেননি কোনো গ্রাহক।

জানা গেছে, কৃষি বিপণন অধিদফতর থেকে বাজারে খুচরা আলু ৩৫ টাকা, পাইকারি ৩০ টাকা ও হিমাগারে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে বলা হয়।

শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত সবাইকে ৪২ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে কিনতে হয়। খুচরা বাজারে পাকরি আলু ৪৪ টাকা, হল্যান্ড ৪২ টাকা ও কার্ডিনাল ৪০ টাকা করে বিক্রি হয়। তবে পাইকারি বাজারে ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজশাহীর সাহেববাজারের খুচরা বিক্রেতারা জানান, সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দিলেও তারা পাইকারি বাজারে বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই তারা প্রতি কেজি ২-৩ টাকা লাভে ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।

এদিকে বগুড়া শহরের কালিতলার গৃহবধূ মাধবী রানী, কাটনারপাড়ার গৃহবধূ লতিফা খাতুন ও চকসূত্রাপুরের গৃহবধূ মোমেনা খাতুন জানান, আলু তরকারি রান্নার প্রধান উপকরণ। আলু ছাড়া ভালো কোনো তরকারি রান্না করা যায় না। অথচ এ আলুর দাম দিনদিন বেড়েই চলেছে। তারা মন্তব্য করেন, কখনও এত দামে আলু খাননি। তারা আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

বগুড়া শহরের রাজাবাজারের আড়তদার (পাইকারি ব্যবসায়ী) আবদুর রহমান জানান, হিমাগারে সরকার নির্ধারিত দরে আলু বিক্রি হচ্ছে না। তাই তিনি ও অন্য ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত দরে বিক্রি করতে পারছেন না। তবে হিমাগার কর্তৃপক্ষ কৌশলে তাদের ক্যাশ-মেমোতে প্রতি কেজি ২৭ টাকা উল্লেখ করছেন। তারা আরও জানান, হিমাগার থেকে আলু আড়তে আনতে গাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য খরচ প্রতি কেজি ২-৩ টাকা পড়ে।

নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হিমাগার মালিক জানান, ব্যবসায়ীরা তাদের হিমাগারে আলু মজুদ রাখেন। আবার তারাই এখান থেকে বিক্রি করেন। ব্যবসায়ীদের সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি করতে বলা হলেও তারা কথা শুনছেন না।

এদিকে আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে র্যাব-১২ বগুড়া স্পেশাল ক্যাম্পের সদস্যরা শুক্রবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাছিম রেজার নেতৃত্বে শিবগঞ্জের দুটি হিমাগারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

র্যাব বগুড়া ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার এরশাদুর রহমান জানান, অবৈধভাবে আলু মজুদ ও অধিক দরে বিক্রি করার অপরাধে আদালত শিবগঞ্জের শাহ সুলতান কোল্ডস্টোরেজের মালিককে ৪০ হাজার টাকা ও আফাকু কোল্ডস্টোরেজের মালিককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে তাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

স/আর