রাজশাহীর সেই বন কর্মকর্তার বাড়িতে মারা গেলেন ঝাড়ুদার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের ১০ জন কর্মচারীকে নিজ বাড়িতে সার্বক্ষণিক কাজ করিয়ে  নেয়া সেই বন কর্মকর্তার বাড়িতে মারা গেলেন বাবলা (৫৫) নামের এক ঝাড়ুদার। আজ বুধবার বিকেল তিনটার দিকে তিনি মারা যান।

জানা যায়, করোনা আতঙ্কে দেশজুড়ে সরকার ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করলেও রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তার আহাম্মেদ নিয়ামুর রহমান তার নিজ বাড়িতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মচারীদের  কাজ করতে বাধ্য করাচ্ছেন। এরই মধ্যে আজ বুধবার তার বাসায় বাবলা (৫৫) নামের ওই ঝাড়ুদারের মৃত্যু হয়েছে। বাবলাকে তড়িঘড়ি করে বাবলাকে রামেক হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

উল্লেখ্য, ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, করোনা আতঙ্কের কারণে দেশজুড়ে জরুরী সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ছাড়া সরকারি-বেসরকারী সকল প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এই ছুটি একদিনের জন্যেও এখনো ভোগ করতে পারেননি রাজশাহী বিভাগীয় বন বিভাগের ১০ কর্মচারী। তিনি তাঁর কার্যালয়ের জন্য একজন পিয়ন ব্যবাহার করতে পারেন। কিন্তু সেখানে তিনি ১০ জন কর্মচারীকে দিয়ে বাড়ির কাজ করাসহ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। এছাড়া সরকারি গাড়িটি অধিকাংশ সময়ই তাঁর বাড়ির কাজে ব্যবাহর করছেন। ওই কার্যালয়ের সরকারি তিনটি গাড়ি ব্যবহার হয় বন কর্মকর্তা, তাঁর স্ত্রী ও কন্যাদের ব্যক্তিগত কাজে।

নিয়ম অনুযায়ী ওই কর্মকর্তার বাসার কাজের জন্য একজন ওর্ডারলি পিয়ন থাকার কথা। কিন্তু তিনি ড্রাইভার, মালি, গার্ড, বাবুর্চি, পরিচ্ছন্নকর্মীসহ মোট ১০ জন সরকারি অফিসের কর্মচারী ব্যবহার করে আসছেন। ছুটির আগেও তিনি এইভাবে কর্মচারীদের ব্যবহার করেন নানা কাজে। এতে করে সরকারি অর্থও অপচয় হচ্ছে তাঁর ব্যক্তিগত কাজের জন্য।

এদিকে, এসব কর্মচারীদের মাঝে দেখা দিয়েছে যেমন করোনা আতঙ্ক, তেমন বাড়িতে থাকতে না পেরে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। তারা জানিয়েছেন, বাসার অনেক কাজ যেগুলো পুরুষ কর্মচারী দিয়ে করানো যায় না সেগুলোও তিনি তাদেরকে দিয়ে করান। যেমন- কাপড় পরিস্কার করা, ঝাড়ু দেওয়া, বাসার পোষা কুকুর-বিড়ালকে খাওয়ানোসহ বিভিন্ন কাজ করিয়ে নেন। ৮ ঘন্টার কাজের কথা থাকলেও এসব সরকারী কর্মচারীদের ১৮ ঘন্টার বেশি কাজ করিয়ে নিচ্ছেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা। আর এসব কাজ করতে না চাইলে কর্মচারীদেরকে বদলিসহ নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নিয়ামুর রহমান বলেন, ১০ জন বাসার কাজ করছে এটা ঠিক নয়। তবে দুই-একজন করে জরুরী প্রয়োজনে এসে কাজ করছে। আবার চলে যাচ্ছে। কাউকে জোর করে কাজ করানো হচ্ছে না। আর অফিসের গাড়ি অফিসের কাজেই ব্যবহার হচ্ছে। আমার বা পারিবারের কাজে ব্যবহার হচ্ছে না।

স/অ