রাজশাহীর দোকানপাট-মার্কেট বন্ধের পক্ষে লিটন-বাদশা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

 

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও আজ রোববার সীমিত পরিসরে খুলছে দোকানপাট ও শপিংমল। তবে রাজশাহী শহরের দোকানপাট-মার্কেট বন্ধ থাকুক, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এমন মতই দিয়েছেন সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান ও সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা।

বিষয়টি নিয়ে এ দুই নেতা শনিবার রাতে জেলা প্রশাসক হামিদুল হকের সঙ্গে কথাও বলেছেন।

এর আগে নগরভবনে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন। সেখানে রাজশাহী শিল্প ও বণিক সমিতির নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। তারাও দোকানপাট-মার্কেট বন্ধ রাখার পক্ষে মত দেন।

এর পর লিটন ও বাদশা এ সিদ্ধান্তে আসেন যে, রাজশাহীতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে হলে দোকানপাট-মার্কেট আরও কিছু দিন বন্ধ রাখা জরুরি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, আমাদের শহর এখনও করোনামুক্ত। কিন্তু ঝুঁকিমুক্ত নয়। শহরকে নিরাপদ রাখতে হলে আমাদের লকডাউন মেনেই চলতে হবে। সে জন্য দোকানপাট-মার্কেট বন্ধ রাখার কোনো বিকল্প নেই।

ঈদের আগে মার্কেট খুলে দিলে আক্রান্ত এলাকা থেকেও অনেকে এ শহরে কেনাকাটা করতে আসবেন। তখন পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাই আমরা দোকানপাট-মার্কেট বন্ধ রাখার পক্ষে। আমাদের সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতারাও একমত। আমাদের মতামত জেলা প্রশাসক হামিদুল হককে জানানো হয়েছে।

গত ১ এপ্রিল রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়। গোটা রাজশাহী বিভাগের মধ্যে এখানেই প্রথম শনাক্ত হন কোনো ব্যক্তি।

এর পর ১৭ জন শনাক্ত হয়েছেন। মারা গেছেন একজন। মারা যাওয়া বৃদ্ধের বাড়ি ছিল জেলার বাঘা উপজেলায়।

এখন জেলার পুঠিয়া উপজেলায় পাঁচ, দুর্গাপুরে দুই, বাগমারায় এক, মোহনপুরে চার, তানোরে তিন এবং পবায় একজন করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছেন।

গত সোমবারের পর রাজশাহীতে নতুন করে কেউ শনাক্ত হননি। রাজশাহী মহানগর এখনও করোনামুক্ত।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য বলছেন, রাজশাহী মহানগরীতে এখনও শনাক্ত হয়নি, কিন্তু শনাক্ত হবে না, বিষয়টি তা নয়। ভবিষ্যতে শনাক্ত হতেই পারে। কিন্তু এখন যে অবস্থা তাতে যদি শহরের মানুষ ঠিকঠাক ঘরে থাকেন, সামাজিক দূরত্ব মানেন এবং সরকারি নির্দেশনাগুলো মেনে চলেন, তা হলে আমাদের ভালো থাকার সম্ভাবনা আগামীতে আরও বাড়বে।

এ অবস্থায় লকডাউন শিথিল না করাটাই যুক্তিযুক্ত বলে মনে করেন তিনি।

তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রোববার থেকে সীমিত পরিসরে দোকান ও শপিংমল খোলা যাবে বলে গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম ও সিলেটের ব্যবসায়ী নেতারা শপিংমল না খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাজশাহীতেও দোকানপাট-মার্কেট বন্ধ রাখার পক্ষে মত দিলেন দুই জনপ্রতিনিধি।

রাজশাহী শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা দোকানপাট-মার্কেট খোলার পক্ষে নই। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, ব্যবসায়ীরাই যদি দোকানপাট-মার্কেট খুলতে না চান, তা হলে সেটি খুব ভালো সিদ্ধান্ত। কিন্তু কেউ যদি দোকানপাট-মার্কেট খোলেনও তা হলে তাকে স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে। কেউ যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানতে পারেন, তা হলে তার দোকান আমরাই বন্ধ করে দেব।

তবে সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন ও সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলছেন, রাজশাহী নগরীর আরডিএ মার্কেট কিংবা কাপড়পট্টির মতো এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই মার্কেট বন্ধ রাখাই ঠিক হবে। নিজেদের জীবনের স্বার্থে তারা ব্যবসায়ীদের দোকানপাট-মার্কেট না খোলার আহ্বান জানান।