রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, রোদে পুড়ছে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে বিরাজ করছে তীব্র দাবদাহ। প্রচণ্ড গরমে নগরবাসীসহ গোটা জেলার মানুষ ও প্রাণীকূলের যেন নাভিশ্বাস উঠেছে। তারা এ দাবদাহে একান্ত কাজ ব্যাতিত বাড়ির বাহিরে অবস্থান করছেন সাধারণ মানুষ। তবে পেটের দায়ে তীব্র গরমেও রাস্তায় নামতে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষকে। সোমবার রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এতে করে তীব্র গরম ও খাঁ খাঁ রোদে দুপুরের দিকে নগরীর সব রাস্তা-ঘাট প্রায় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় কিছুটা স্বস্তি পেতে অনেকেই ছুটছেন আখের রস, তরমুজ, শসা ও ডাবের পানির দিকে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা এসব কেনা-বেচাও হচ্ছে দেদার। আবার কনফেকশনারী থেকে শুরু করে বিস্কুট বিপনীগুলোতে আইসক্রীম ও কমল ঠান্ডাপানী ‘র বেচা-বিক্রি বেড়েছে।ভ্রাম্যামান আইসক্রীম ওয়ালাদেরও ব্যবসা বেড়েছে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্র মতে, সোমবার চলতি বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন রবিবার ছিল ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

নগরীর কলাবাগানের রাজীব স্মৃতি চত্বরে বসে থাকা এক ভ্রাম্যমাণ আখের রস বিক্রেতা জানান, এই গরমে আখের রস মানুষের তৃষ্ণা মেটানোর সাথে সাথে ক্লান্তি দুর করতে সাহায্য করে। এ জন্য পথচারীরা গরমের দিনে আখের রস বেশী খেয়ে থাকেন। প্রতি গ্লাস আখের রসের দাম ১০ টাকা। সারাদিন দিনে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকার আখের রস বিক্রি করেন বলেও জানালেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘কর্মজীবী মানুষ বিশেষ করে রিকশা-ভ্যান চালকরা বেশী এই আখের রস খায়। ধনীরা এদিকে তেমন ভিড়ে না।’

নগরীর লক্ষিপুর মোড়, সি এন্ড বি মোড়, ফায়ার সার্ভিস মোড় ও সাহেব বাজারসহ আরও কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, এসব বাজারেও আখের রস, তরমুজ ও ডাব বিক্রি করছেন বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা। লক্ষিপুর মোড়ে একজন ডাব বিক্রেতা সলিমুদ্দিন বলেন, সারা বছরই এখানে ডাব বিক্রি করি। অন্য সময় ডাব তেমন খুব একটা বিক্রি হয় না। তবে এই গরমকালে ডাবের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। গরমের অস্বস্তি দুর করতে অনেকেই ডাব খান। প্রকারভেদ প্রতিটি ডাবেএখন ২০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে নগরীতে।

লক্ষীপুর এলাকায় ডাব পানে ব্যস্ত এমন একজন ক্রেতা আনিসুল হক বলেন, ‘যা গরম পড়ছে, তাতে ডাবের কোনো বিকল্প নাই। ডাব খেলে অনেকটা স্বস্তি আনে মনে। শরীরও ঠান্ডা থাকে।’

নগরীর রেলগেট এলাকার তরমুজ বিক্রেতা নুরুল ইসলাম বলেন, একটু নরমাল আবহাওয়া হলেই তরমুজ বিক্রি কমে যায়। আবার যখন গরম বাড়ে, তখন বিক্রি বাড়ে। এখন তীব্র গরমে তরমুজের বেচা-বিক্রি বেড়েছে প্রায় তিনগুন বলেও জানান তিনি।

এদিকে নগরীর বিভিন্ন কনফেকশনারীর ও দোকান ও ফার্মেসি ঘুরে দেখা যায়, দাবদাহের কারণে সেসব দোকানে বিভিন্ন ব্যান্ডের কোল্ডড্রিংস্ ও আইসক্রিম মজুদ করা আছে এবং এগুলোর চাহিদাও বেড়েছে প্রচুর। বিশেষ করে তরুণদের এসব কিনতে দেখা গেছে বেশী ।

নগরীর বিস্কুট বিপনীর কর্মচারী সোহেল রানা জানান, তীব্র গরমের কারণে তাদের মূলত ঠান্ডা পানীয ও আইসক্রিম বেশী বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ফ্রিজের ঠান্ডা পানির (মিনারেল ওয়াটার) চাহিদা রয়েছে।
নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমান আইসক্রিম বিক্রেতাদেরও ব্যবসা বেড়েছে বলে জানান আইসক্রিম বিক্রেতা হাফিজ উদ্দিন।

স/আর