রাজশাহীতে শ্রেনিকক্ষে চিপস খাওয়ার কারণে ৪র্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থীকে মারধর

নিজস্ব প্রতিবেদক:

শ্রেনিকক্ষে চিপস খাওয়ার কারণে রাজশাহীর তানোর উপজেলার ৪র্থ শ্রেনীর এক মেধাবী শিক্ষার্থীকে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সবুর বেধড়ক পিটিয়ে অসুস্থ করে ফেলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর পিতা বাদি হয়ে ওই দিন উপজেলা নির্বাহী ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার (১৮ এপ্রিল) সকালের দিকে উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমানসহ আরেক কর্মকর্তা তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। উপজেলার কলমা ইউপির অমৃতপুর উপজাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত শনিবার (১৬ এপ্রিল) ঘটনাটি ঘটে।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম আব্দুস সবুর ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম আশরাফুল ইসলাম (১০)। ক্লাসে রোল নম্বর তিন।

এতে করে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। তবে স্থানীয় কিছু ব্যক্তিকে নিয়ে ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে শিক্ষার্থীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গত ১৬ এপ্রিল শনিবার স্কুল চলাকালীন সময়ে চিপস্ খাবার কারণে চতুর্থ শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলামকে  বেত্রাঘাত করেন প্রধান শিক্ষক। বাড়ি ফিরেই আশরাফুল গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে আশরাফুল সুস্থ হলেও এখনো আতঙ্কিত। ‘ওই শিক্ষক থাকলে সে আর স্কুলে যাবে না’ বলছে সে। এমনকি ভয়ে স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আশরাফুলের বেত্রাঘাত দেখে আতঙ্কে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

অভিভাবকরা বলছেন, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করা না হলে, তারাও তাদের সন্তানদের স্কুলে লেখাপড়া করাবেন না।

স্থানীয় অভিভাবক সেকেন্দার আলী, আবুল কালাম ও বিনোদ হেমরম বলেন, প্রধান শিক্ষক সবুর এর আগে এক আদিবাসি শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে বেশ কিছুদিন কারাভোগ করেছেন। ওই ক্ষোভে উপজাতি পাড়া স্কুল হলেও উপজাতি কোনো ছেলে-মেয়ে এখানে পড়ালেখা করেন না। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী প্রহারের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এমনকি স্কুলের মাঠ ভাড়া দিয়ে কচু চাষ করানো হচ্ছে। এমনকি স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের অপসারন দাবি করে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সবুর অভিযোগ স্বীকার করে বলেন,  ক্লাসে বসে চিপস খাচ্ছিল। এজন্য একটা লাঠির বাড়ি দিয়েছি। এমন শাসন না করলে হয় না। এর আগে এক উপজাতি ছাত্রীকে ধর্ষণের জন্য জেল খেটেছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, হ্যাঁ এক মাসের অধিক কারাভোগ করেছি। কিন্তু মিথ্যা মামলা ও প্রমাণ না থাকায় আমার পক্ষে রায় হয়েছে।

এটিও মিজানুর রহমান জানান, তদন্তে মারপিটের প্রমান পাওয়া গেছে, এটার প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় ব্যবস্হা বা মামলা হতে পারে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল হামিদ বলেন, শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করা দুঃখজনক ঘটনা।

জি/আর