রাজশাহীতে যুবককে হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনায় ২ যুবতী আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার সায়েরগাছা এলাকায় এক যুবককে হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনা মেরিনা খাতুন (২১) ও নেশা খাতুন (২২) আটক করেছে কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশ। ১২ ঘন্টার মধ্যে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত মেরিনা ও নেশা কাশিয়াডাঙ্গা থানার সায়েরগাছা এলাকার যথাক্রমে একরামুল ইসলাম ভাদু ও মো: ঈশা হকের মেয়ে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর থানার পয়লান গ্রামের মো: জহির মন্ডলের ছেলে রশিদুল মন্ডল পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। সে মাঝে মাঝে ধান কাটা-সহ অন্যান্য কাজের জন্য রাজশাহীতে আসতো। এই সুবাদে প্রায় এক বছর আগে আসামি মেরিনা খাতুনের সাথে পরিচয় হয় এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মেরিনা খাতুন সায়েরগাছার বুলবুল আহম্মেদের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতো।

জানা যায়, গত ১৪ জুন ২০২২ রাতের রশিদুল সায়েরগাছার বুলবুলের বাড়ীতে মেরিনার সাথে দেখা করতে যায়। সেখানে মেরিনা কথা-বার্তার একপর্যায়ে রশিদুলকে বিয়ের কথা বলে। রশিদুল পরিবারের সাথে কথা বলে পরে জানাবে বলে জানায়। কিন্তু মেরিনা রাতেই বিবাহ করার জন্য চাপ দেয় ও জোর জবরদোস্তি করতে থাকে। রাত ১১ টায় রশিদুল সেখান থেকে চলে যেতে চাইলে মেরিনা তাকে বাঁধা দেয় এবং উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে মেরিনা খাতুন ধাক্কা দিয়ে রশিদুলকে ফেলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। বাড়ির লোকজন ঘুম থেকে উঠার আগেই সকাল ৭ টায় মেরিনা অপর আসামি নেশা খাতুনকে সেখানে ডেকে দুইজন মিলে মৃতদেহ বাড়ির ছাদের স্টোর-রুমে রেখে তালাবদ্ধ করে রাখে।

কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি টিম বুধবার (১৫ জুন) দুপুরে সায়েরগাছার বুলবুল আহম্মেদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রথমে মেরিনাকে আটক করে। পরে মেরিনার দেয়া তথ্যমতে বাড়ির ছাদের স্টোর রুম থেকে রশিদুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ। এর পর লাশ গুমে সহযোগিতা করায় নিজ বাড়ি থেকে নেশা খাতুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওসি বলেন, বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুই আসামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত প্রেমিক রশিদুলের পিতা জহির মন্ডল বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সে মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের আদালতে চালান দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

এস/আই