আড়ানী পৌর মেয়র কারাগারে: নাগরিক সেবায় ভোগান্তি


বাঘা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভায় মেয়র কারাগারে থাকায় নাগরিক সেবায় ভোগান্তিতে পড়েছে পৌরবাসি। গত এক সপ্তাহ যাবত পৌর সেবা নিতে আসা ব্যক্তিরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়।  এ নিয়ে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কোন ভূমিকা নেই বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।

জানা যায়, আড়ানী পৌরসভার মেয়র মুক্তার আলীর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের একটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল আদালত থেকে। উচ্চ আদালত থেকে নেওয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও মুক্তার আলী নিম্ন আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এর ভিত্তিতে তাকে ৬ জুন দিনগত রাতে বাঘা থানা পুলিশের সহায়তায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল পৌরসভার পিয়াদাপাড়া মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন। তারপর থেকে পৌরসভায় মেয়র নেই। বর্তমানে মেয়র কারাগারে থাকায় এক সপ্তাহ যাবত পৌর সেবা নিতে আসা ব্যক্তিরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।

এ বিষয়ে আড়ানী চকসিংগা গ্রামের লিটন আলী বলেন, আমার জন্ম নিবন্ধনের খুব প্রয়োজন। আমি এক সপ্তাহ যাবত পৌরসভায় ঘুরছি, জন্মনিবন্ধন পাচ্ছিনা। এ নিয়ে আমি খুব বেকায়দায় পড়েছি। এরমধ্যে অনেকেই চাকরির জন্য আবেদন করবেন, কিন্তু নাগরিকত্ব পাচ্ছেনা, অনেকেই চিকিৎসার জন্য ভারতে যাবেন, জন্মনিবন্ধনের প্রয়োজন, তাও নিতে পারচ্ছেনা। আমার মতো প্রতিদিন শতশত মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। তবে এর সমাধান কি কিছুই বুঝতে পারছিনা। আদৌ কি জন্মনিবন্ধন পাব এ পৌরসভা থেকে, এমন প্রশ্ন করে তিনি।

এ বিষয়ে আড়ানী পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ কার্তিক চন্দ্র হালদার বলেন, মেয়র না থাকায় পৌরসভার জনগণ আমার কাছেও আসছেন। কিš‘ অফিসিয়ালভাবে আমাকে কোন দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। আমি কোন কাগজপত্রে স্বাক্ষর করার একতিয়ার আমার নেই। তবে পৌরবাসি ভোগান্তিতে রয়েছেন।

উল্লেখ্য, আড়ানীর এক কলেজ শিক্ষককে পেটানো ও তার বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা গত বছরের ৬ জুলাই দিবাগত রাতে পুলিশ মেয়র মুক্তার আলীর পিয়াদাপাড়ার বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মুক্তার পালিয়ে যায়। তবে বাড়িতে তাল্লাশী করে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, মাদক ও নগদ প্রায় এক কোটি টাকাসহ মেয়রের স্ত্রী এবং ভাতিজাকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনার দুইদিন পর ৮ জুলাই দিবাগত রাতে পাবনার ঈশ্বরদী থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেন। এরপর তিনি কয়েকমাস কারাগারে ছিলেন। পরে গত বছরের ১২ জুলাই স্থানীয় সরকার বিভাগ তাকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরে মামলায় জামিনে উচ্চ আদালতের আদেশের মাধ্যমে ২২ মার্চ মেয়র পদে ফিরে আসেন। তিনি আবারও ৬ জুন গ্রেফতার হন। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

এস/আই