রাজশাহীতে বিদ্যুতের ভৌতিক বিল বন্ধ ট্রেনের টিকেট নিশ্চিতের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিদ্যুতের ভৌতিক বিল বন্ধ, রাজশাহী-ঢাকা ট্রেনের টিকেট নিশ্চিত, যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধি ও রাজশাহী-আবদুলপুর ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। শনিবার সকালে রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পরিষদের সভায় এসব দাবি জানানো হয়।

রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মো. লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক মো. জামাত খান, সাংগাঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক দেবু, সহ সভাপতি আলহাজ হারুনার রশিদ, কল্পনা রায়, এ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য এ্যাডভোকেট ইয়াহিয়া, অধ্যাপক জিএম হারুণ, ডা. হেমায়েতুল্লাহ আরিফ, প্রকৌশলী খাজা তারেক, মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু, পরিবেশবিদ মিজানুর রহমান, সেলিনা খাতুন, এম. শরীফ, সামশুল ইসলাম বাদশা, মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী বরজাহান, সুভাষ চন্দ্র হেমব্রন, জাহিদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সভায় বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে শীতকাল চলছে। বিদ্যুতের ব্যবহার অনেকাংশে কমে গেছে। তবুও বিদ্যুৎ বিভাগ ভৌতিক বিল তৈরী করে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এ ব্যাপারে গ্রাহকরা অভিযোগ করলে নতুন মিটার লাগানোর তাগিদ দেয়া হচ্ছে। এতে গ্রাহকরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। একই সভায় রেলের টিকেট নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

বক্তারা বলেন, রাজশাহী থেকে ঢাকামুখি তিনটি ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনের যাত্রীরা সবচেয়ে বেশী যাতায়াত করেন। তবে রেলের টিকেট কালোবাজারে চলে যাওয়ায় ইচ্ছে থাকলেও অনেকে ৮/১০ দিন আগে গিয়েও টিকেট পাচ্ছে না। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে টিকেট কিনতে হচ্ছে। এছাড়া দীর্ঘদিনের দাবি রাজশাহী-আবদুলপুর ডুয়েল গেজ লাইন দ্রুত নির্মানেরও দাবি জানানো হয়।

সভা থেকে রাজশাহী নগরীর ভাঙা-চোরা রাস্তা-ঘাট মেরামত, ফুটপাত দখলমুক্ত, মশক নিধন কার্যক্রম শুরু ও নাগরিক সেবা নিশ্চিতের জন্য সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জেলা মণিটরিং কার্যক্রম বাজানোর জন্য জোর দাবি জানানো হয়েছে।

বক্তারা বলেন, বাজারে চাল, ডালসহ নিত্য পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেলেও প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই। এ কারণে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমত সব পন্যের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসনের মনিটরিং জোরদারের দাবি জানান রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।

তারা বলেন, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতিনিয়ত রোগীরা হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। সিভিল সার্জনের তদারকি না থাকায় নগরীতে যত্রতত্র ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসার শিকার হচ্ছেন রোগীরা। অনেকে মৃত্যুর মুখে ঢলেও পড়ছেন। এ অবস্থায় সিভিল সার্জনের জোর নজরদারী ও মনিটরিংয়ের দাবি জানানো হয়। এছাড়া নগরীতে যত্রতত্র অটোরিকশা ও সিএনজি নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক ব্যবস্থা জোরদারের জন্য মহানগর পুলিশ কমিশনারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

সভা থেকে আরো বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী নগরীর মানুষ বাসাবাড়িতে গ্যাসের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। অনেকে টাকা জমা দিয়ে বাড়িতে ওয়ারিং করে রেখেছেন। তবে অদৃশ্য কারনে গ্যাসের সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। দ্রুত বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগেরও জোর দাবি জানানো হয়েছে সভা থেকে। চলতি মাসের মধ্যে এসব সমস্যা দ্রুত সমাধান না হলে নতুন বছরের শুরু থেকেই রাজশাহীবাসীকে সঙ্গে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।