রাজশাহীতে ‘প্রক্সি’ দিয়ে লিখিত পার, মৌখিক পরীক্ষায় গিয়ে ‘ধরা’


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিস সহায়ক পদের চাকরির লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সির মাধ্যমে উত্তীর্ণ হলেও সংশ্লিষ্ট এক চাকরিপ্রার্থীর শেষ রক্ষা হলো না। মৌখিক পরীক্ষায় প্রশ্নের কোনো উত্তর এবং লিখিত পরীক্ষার সঙ্গে হাতের লেখা না মেলায় অবশেষে ধরা খেয়েছেন ওই চাকরিপ্রত্যাশি। গত শনিবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষা দিতে এসে সাইমুম হাসান নামের ওই নিয়োগ প্রত্যাশী ধরা পড়েন। ধরা পড়ার পর তিনি প্রক্সি পরীক্ষার্থী নিয়ে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণের কথা স্বীকার করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মোট ৩৪টি পদের জন্য সম্প্রতি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে ১৩টি পদ অফিস সহায়কের। সাইমুম ছিলেন এ পদেরই প্রার্থী। শনিবার বিকেল থেকে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছিল। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরীসহ ভাইভা বোর্ডের সদস্যরা সব প্রার্থীরই লিখিত পরীক্ষার খাতার সঙ্গে মৌখিক পরীক্ষার সময় হাতের লেখা মিলিয়ে দেখছিলেন। তখনই সাইমুমের হাতের লেখা লিখিত পরীক্ষার খাতার সাথে মেলেনি। এরপর জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি প্রক্সি পরীক্ষার্থী নিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার কথা স্বীকার করেন।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাইমুম হাসান (২৫) রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার গঙ্গানারায়ণপুর গ্রামের মমতাজুল ইসলামের ছেলে বলে জানা গেছে। সাইমুম চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি কলেজ থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক পাস করেন ২০১৯ সালে। তার বাবা একজন কলেজ শিক্ষক।দণ্ডপ্রাপ্ত সাইমুম জানান, প্রাইভেট পড়তে গিয়ে রাজশাহীর কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার মো. ওয়ালিদ নামের শিক্ষকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেই ওয়ালিদ-ই সম্প্রতি তার চাকরির লিখিত পরীক্ষা দিয়ে যান। এতে তিনি পাস করেন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল জানান, এই পরীক্ষার্থী নিজে যে খাতায় লিখেছেন, তাতে শূন্য পেয়েছেন। আর তার নামে অন্যজন যে খাতা জমা দিয়ে গেছেন, তিনি খাতায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষায় মূল চাকরিপ্রত্যাশী কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছিলেন না। এছাড়া তারা লিখিত পরীক্ষার খাতার সঙ্গে মৌখিক পরীক্ষার সময় হাতের লেখা মিলিয়ে দেখেন। আর লেখা মেলাতে গিয়েই তিনি ধরা পড়ে যান। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘এই অপরাধের জন্য ১৮৬০ সালের পেনাল কোডের ১৮৮ ধারা মোতাবেক সাইমুমকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’ প্রক্সি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলেও জানান ডিসি।

এএইচ/এস