বুধবার , ১৮ এপ্রিল ২০১৮ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

রাজশাহীতে পুকুর ভরাটের নেতৃত্বে ওয়ার্ড কাউন্সিলর!

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
এপ্রিল ১৮, ২০১৮ ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে রাজশাহী নগরীর মহিষবাথান টুলটুলিপাড়া এলাকায় বিশালাকার একটি পুকুর ভরাট করছেন প্রভাবশালীরা। যার নেতৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কামরু। তাঁর সঙ্গেই জমি মালিক চুক্তি করে পুকুরটি ভরাট করে নিচ্ছেন।

এ নিয়ে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মাঝে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন, স্থানীয় থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে; কিন্তু বন্ধ হয়নি পুকুর ভরাটকাজ। দিনের বেলা প্রকাশ্যেই এই পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে। তবে প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে প্রতিবাদের সাহস করতে পারছেন না।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর মহিষবাথান টুলটুলিপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত বিশালকার ওই পুকুরটি। ট্রাকযোগে বালু এবং মাটি এনে এরই মধ্যে পুকুরটির অন্তত ৮০ ভাগ ভরাট করা হয়েছে। একদিকে ভরাট কাজ চলছে, অন্যদিকে মাটি এবং বালুগুলো বুলডজার মেশিন দিয়ে সমান করা হচ্ছে। এই কাজ দেখা-শোনার জন্য স্থানীয় ৪-৫ যুবককেও পাহারায় রাখা হয়েছে। পুকুর মালিক সাধির রহমানকেও তদারকি করতে দেখা যায়।

জানতে চাইলে বুলডজারের মালিক ডিউল নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কামরু আমাদের ঠিক করে দিয়েছেন। তাই আমরা কাজটি করে দিচ্ছি।’


কিছুক্ষণ পরেই বুলডজার মালিক এই প্রতিবেদককে ফোন ধরিয়ে দিয়ে বলেন কথা বলেন কাউন্সিলর কথা বলবে। এরপর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কামরু পরিচয় দিয়ে প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভাই একটু দেখেন।’

এদিকে স্থানীয় এক নারী পরিচয় গোপন রেখে জানান, পুকুরটির মালিক সাধির রহমান। তাঁর দুই ছেলে আশরাফুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম পুকুরটি ভরাট করে নিচ্ছেন কাউন্সিলরের সহযোগিতায়। কাউন্সিলরের সঙ্গে চুক্তি করেই পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে। অথচ এই পুকুরটির পানি এলাকার শত শত মানুষ ব্যবহার করেন। এলাকাটির অধিকাংশ মানুষ নিন্ম ও মধ্যবিত্ত হওয়ায় পুকুরের পানিই বাসা-বাড়ির বিভিন্ন কাজসহ গোসলেও ব্যবহার করেন। সারা বছরই পুকুরটিতে পর্যাপ্ত পানিও থাকে। কিন্তু এখন ভরাট করার ফলে এলাকাবাসী আর পুকুরটির পানি ব্যবহার করতে পারবে না। আবার ওই এলাকায় পানি সঙ্কট দেখা দিবে।

স্থানীয় মুকুল হোসেন নামের এক বৃদ্ধ বলেন, মেলা দিন (দীর্ঘ দিন) ধরেই এই পুকুরটি দেখে অ্যাসছি; কিন্তু চোখের পলকেই পুকুরটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। কেউ কোনো প্রতিবাদেরও সাহস করতে প্যারছে না। সাহস কইরবে কি কর‌্যা। যেখানে কাউন্সির নিজেই পুকুর ভরাট কর‌্যা দিচ্ছে, সেখানে কে কি বুইলবে?

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মজিবুর রহমান জানান, ‘গত ৪-৫ দিন ধরেই হঠাৎ করে পুকুরটির ভরাটকাজ শুরু হয়। এখন প্রায় ভরাট শেষের দিকে। এরই মধ্যে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশনে, থানায় অভিযোগও করা হয়েছে; কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এতে করে বিনা বাধায় পুকুরটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। অথচ পুকুর ভরাট নগরীতে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তার পরেও সেই কাজটিই করছেন জমি মালিক। আর তাঁকে সহযোগিতা করছেন কাউন্সিলর।’

তবে পুকুর মালিক সাধির রহমানের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলেন। আমাদের এটি পুকুর ছিল না। মাঠিয়াল ছিল। খতিয়ানেও মাঠিয়াল ছিল। তাই ভরাট করছি।’

এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘পুকুর এবং সকল প্রকার জলাশয় ভরাটকাজ উচ্চ আদালত থেকে নিষেধাক্কা জারি করা আছে। কিন্তু একের পর এক পুকুর ভরাট হচ্ছেই। আমাদের অগোচরেই এই পুকুরগুলো ভরাট হচ্ছে। আর যারা এগুলো করছে-তাদের বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশন থেকে কোনো পদক্ষেপও নেওয়া যাচ্ছে না।’

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে হ্যারিটেজ রাজশাহীর পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে রিট করা হলে আদালত রাজশাহী নগরীতে সকল ধরনের জলাশয় ভরাটরোধে নিষেধাক্কা জারি করেন। ওই নিষেধাক্কা এখনো বলবত থাকলেও পুকুর ভরাট বন্ধ করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে রাজশাহীবাসীর মাঝে রয়েছে চরম ক্ষোভ।
স/শ

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর

আপনার জন্য নির্বাচিত