রাজশাহীতে ঘুষ নিয়েও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ টিএসআই মনিরের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে ঘুষ নেওয়ার পরেও মিথ্যা মামলায় ফাঁ সানোর অভিযোগ উঠেছে এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে। ছেলেকে ছাড়ানোর জন্য ১৯ হাজার টাকা নেওয়ার পরেও আদালতে চালান দেয় বলে রোববার রাজশাহী মেট্রোপলিটন কমিশনার বরাবর অভিযোগ প্রদান করেছেন ভুক্তভোগীর মা সুফিয়া বেওয়া।

অভিযুক্ত হলেন, বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির টিএসআই মনিরুল ইসলাম।

অভিযোগে সুফিয়া বেগমে উল্লেখ করেন, বিগত সময়ে আমার বড় ছেলে শফিকুল ইসলাম মফি মাদক সেবনে আসক্ত ছিল। গত ৪-৫ মাস থেকে সে কোন প্রকার নেশার সাথে জড়িত নয়। গত ৪ সেপ্টেম্বর রাত ১১ টার দিকে কর্মস্থল থেকে অটোতে করে বাসায় ফেরার পথে বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে এসআই মিনারজুল হকসহ আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য অটো রিকশা থামিয়ে আমার ছেলে মফিকে ওয়ারেন্ট আছে বলে টেনে ফাঁড়ির মধ্যে নিয়ে যায়। এ বিষয়টি একই এলাকার পারভেজ, রান্টু সহ আরও ৪/৫ জন দেখে বিষয়টি আমাকে জানালে আমি আমার মেয়ে সীমাকে নিয়ে ফাঁড়িতে যাই। সেখানে ফাঁড়ির ইনচার্জ টিএসআই মনিরুল ইসলাম বলেন, আপনার ছেলের নামে অনেক মামলা আছে। তার নামে ইয়াবা ও হেরোইন মামলা দেয়া হবে। তবে ৩০ হাজার টাকা দিলে ছোট মামলা দিয়ে চালান দিবো। নাতো এমন মামলা দিবো সারা জীবন জেলে পঁচবে। এমন কথা বললে আমি আমার মেয়ে সীমাকে টিএসআই মনিরুলের দাবিকৃত অর্থ সংগ্রহের জন্য অনেক ছুটোছুটি শুরু করি। এর মধ্যে টিএসআই মনিরুল ইসলাম কয়েকবার তার ব্যবহৃত ০১৭২৬-৮৫৩৫১৭ নম্বর থেকে আমার নম্বরে ০১৭৫৮৪৩৩৯৯৩ ফোন দিয়ে বলে তাড়াতাড়ি টাকা নিয়ে আসেন না হলে বড় মামলা দিয়ে চালান দিয়ে দিবো। আমি ছেলেকে মিথ্যে মামলা থেকে বাঁচাতে মানুষের কাছে থেকে ধার করে ১৯ হাজার টাকা ফাঁড়ির ইনচার্জ  টিএসআই মনিরুল ইসলামকে দিলে মনিরুল ইসলাম আমাকে আমার ছেলে মেয়ের কসম দিয়ে বলে “এই টাকার বিষয়ে আপনি আর আমি ছাড়া অন্য কেউ যেন না জানে। আপনি বাসায় চলে যান। আপনাকে কোর্টে বা থানায় যাওয়া লাগবে না। রবিবার আমি আপনার ছেলেকে বের করে এনে দিবো।”

পরে বৃহস্পতিবার কোর্টে গিয়ে উকিলের মাধ্যমে জানতে পারি আমার ছেলে মফির নামে ৬০ গ্রাম হেরোইনের মামলা দিয়ে চালান করেছে টিএসআই মনিরুল। যার নম্বর ২৫/৯৩০। মামলার কাগজ তুলে বাড়ি ফিরে এসে মামলার স্বাক্ষী আরাফাত হোসেন(৩৫) ও রতন (২৮) এর সাথে কথা বললে তারা বলেন মফিকে বোসপাড়া ফাঁড়ির সামনে অটো থেকে নামিয়ে ভেতরে নিয়ে যায়। পরে আমাদের স্বাক্ষীগণকে ফাঁড়িতে ডেকে ওয়ারেন্ট আছে মর্মে একটি কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। তবে মফির কাছে থেকে পুলিশ মাদক পেয়েছে এমনটি দেখিনি। এমনকি মামলার এজহারে উল্লেখিত মফিকে রাণীনগর হাদির মোড় যাত্রী ছাউনির সামনে থেকে গ্রেফতারের বিষয়টিও মিথ্যা বলে জানান তারা।