রাজশাহী মেডিকেল থেকে করোনামুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরল ৪৫ দিনের শিশু আফরিন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে ৪৫ দিনের শিশু আফরিন রহমানকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত শনিবার (২৬জুন) ভর্তির সময় তার শ্বাসকষ্ট থাকলেও এখন অনেকটাই সুস্থ বলে জানিয়েছেন তার মা মাহবুবা খাতুন।
তিনি জানান, আফরিনের শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় তিনি রোববার রাতেই বাসায় নিয়ে গেছেন। এখন চিকিৎসকদের পরামর্শে তার ওষুধ চলছে। তবে রোববার শিশু আফরিন ও তার মা মাহবুবা খাতুনের নমুনা পরীক্ষায় ফল নেগেটিভ এসেছে।
এদিকে, তীব্র শ্বাসকষ্ট ও খিঁচুনি নিয়ে শনিবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর পরই তার নমুনা নেওয়া হয়। শনিবার রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার ফলে শিশুটির করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়।
শনিবার রাতেই পরিবারকে জানানো হয়। রোববার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফল হাতে পান। কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে জায়গা না পেয়ে শিশুটির মা শেষ পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পেরেছেন। শিশুটিকে রাজশাহী মেডিকেলের ১৬ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছিল।
শিশু আফরিন রহমানের পরিবার রাজশাহী নগরের ছোট বনগ্রাম বড় রাস্তার মোড় এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা আরিফুর রহমান করোনা পজিটিভ হয়েছেন। তিনি বাড়িতেই আইসোলেশনে রয়েছেন।

শিশুটির মা মাহবুবা খাতুন জানান, মেয়ে আফরিনের জন্য হাসপাতালের ব্যবস্থা করতে খুবই দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাকে। গত ২০ জুন র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় শিশুটির করোনা শনাক্ত হয়।

শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে প্রথমে রাজশাহী রয়েল হাসপাতাল ও রাজশাহী খ্রিস্টান মিশন হাসপাতাল নামের দুটি বেসরকারি হাসপাতালে যান তিনি। তবে, করোনা আক্রান্ত হওয়ায় সেখানে জায়গা হয়নি আফরিনের।

শেষ পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেন মাহবুবা। তবে, সেখানে করোনা আক্রান্ত শিশুদের জন্যে আলাদা কোনো ব্যবস্থা না থাকায়, অন্য রোগীদের সঙ্গেই রাখা হয়েছে আফরিনকে। তার দেখাশোনা করার জন্য আক্রান্ত না হয়েও ঝুঁকি নিয়ে করোনা ইউনিটে থাকছেন মাহবুবা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানি বলেন, ‘শিশুদের জন্যে হাসপাতালে কোনো আলাদা ব্যবস্থা করা হয়নি। কারণ শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ খুব বিরল। সংক্রমিত শিশু তেমন একটা দেখতে পাই না আমরা।’

তবে, গত মে’তে আরেকটি শিশু করোনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আফরিনকে কোভিড ওয়ার্ডে ভর্তি করা হলেও শিশু বিশেষজ্ঞরাই তাকে দেখেছে।’ হাসপাতালে চিকিৎসার নেওয়ার পর ওই শিশুটি সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে যায়। করোনা শুরুর পর এই হাসপাতালে করোনাক্রান্ত হয়ে কোনো শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি বলেও তিনি জানান।