রাজশাহীতে উচ্ছেদ আতঙ্কে ৪০টি আদিবাসী পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর পবা উপজেলাধীন নওহাটা মহানন্দাখাল আদিবাসী পল্লীর ৪০টি আদিবাসী পরিবার এখন উচ্ছেদ আতঙ্কে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা তাদেরকে ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। এমনকি পুলিশ প্রশাসনও আদিবাসীদের উচ্ছেদের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

মহানন্দা খালের আদিবাসীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তার প্রায় ৪০ বছর ধরে সেখানে বসবাস করছেন। তাদের জানা মতে, এলাকাটি খাস জমি। তবে তাদেরকে সেখানে বসতি গড়তে সহযোগিতা করেছিলেন এলাকার প্রভাবশালী ভূস্বামী গিয়াশ উদ্দিন। অত্যন্ত জঙ্গলপূর্ণ এলাকা ছিলো মহানন্দা খাল। আদিবাসীরা দিনরাত পরিশ্রম করে সেই খালটি বসবাস উপযোগী করে গড়ে তুলেছেন তিলে তিলে।

আদিবাসীদের অভিযোগ, হঠাৎ করেই গিয়াশ উদ্দিনের ছেলে জোবায়ের ওই এলাকাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য আদিবাসীদের হুমকি প্রদান করেছেন। পুলিশ প্রশাসনও সহযোগিতা করছে জোবায়েরকে। পবা থানায় আদিবাসী নেতাদের ডেকে হুমকি প্রদানও করা হয়েছে। থানার ওসি একটি সাদা কাগজে আদিবাসীদের স্বাক্ষর নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন আদিবাসী নেতারা।

বয়জ্যেষ্ঠ আদিবাসী নেতা ধীরেন ওঁরাও ও আরতি ওঁরাও অভিযোগ জানান, তাদের উচ্ছেদ করা হলে তারা পথে বসবেন। মাথা গোঁজার স্থান তাদের থাকবে না। দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় তারা সেখানে বসবাস করছেন। তাদেরকে সেখান থেকে উচ্ছেদ মানবাধিকার লঙ্ঘন বলেও তারা জানান।

আদিবাসী সংগ্রাম পরিষদের উপদেষ্টা কমরেড মাসুদ রানা আদিবাসীদের উচ্ছেদের চেষ্টা তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, সমতলের আদিবাসীরা এমনিতেই অধিকার বঞ্চিত। মাথা গুঁজবার স্থানটিও কেড়ে নেয়া হলে তারা বিলিন হয়ে যাবে। পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ওসি সেখান থেকে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করার কেউ নয়। কেনোনা ওই ভূমির মালিক দাবিদাররা আদালত থেকে কোনো উচ্ছেদ আদেশ নিয়ে যান নি যে পুলিশ সেই আদেশ পালন করছে। পুলিশের এই অতিউৎসাহী ভূমিকা নিন্দাজনক বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

এ ব্যাপারে পবা থানার ওসি পরিমল জানান, আদিবাসীদের উচ্ছেদের কোনো হুমকি প্রদান করা হয় নি। জমির মালিক তাদেরকে ছেড়ে যেতে বলেছে। আদিবাসীরাও তাতে সম্মত হয়েছে। এখানে তাদের হুমকি বা চাপ প্রয়োগের বিষয়টি সঠিক নয়।
স/শ