রাজকুমারীর শেষ জন্মদিন

শনিবার নিজের ৩০তম জন্মদিন উদযাপন করেছেন জাপানের রাজকুমারী মাকো। অনেক জল ঘোলা হওয়ার পর শেষমেষ রাজ্যপাট ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে আগামী সপ্তাহে গাঁটছড়া বাঁধতে যাচ্ছেন তিনি। তাই রাজকুমারী হিসেবে এটাই তার শেষ জন্মদিন।

রাজপ্রাসাদের বাগানে ছোটবোনের সঙ্গে রাজকুমারী মাকোর ছবি প্রকাশ করেছে ইম্পেরিয়াল হাউসহোল্ড এজেন্সি। তবে জন্মদিন উপলক্ষে কোনো মন্তব্য করেননি রাজকুমারী মাকো।

২৬ অক্টোবর দীর্ঘদিনের প্রেমিক কেই কোমারোর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে যাচ্ছেন রাজকুমারী মাকো। বহুল আলোচিত এই বিয়েতে কোনো ঐহিত্যবাহী আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয়নি বলে জানা গেছে।

এমনতিই সাধারণ পরিবারের ছেলেকে বিয়ে করার জন্য নিজের রাজ্যপাট ছাড়তে হচ্ছে রাজকুমারী মাকোতে। ত্যাগ করছেন নিজের পদবী এবং রাজপরিবার থেকে দেওয়া এককালীন অর্থ।

রাজকুমারী মাকোর সঙ্গে ২০১২ সালে টোকিওর ইন্টারন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় কোমারোর পরিচয় হয়। এর ৫ বছর পর ২০১৭ সালে নিজেদের বাগদানের ঘোষণা দেন তারা।

বছর তিনেক আগে ২০১৮ সালেই কেই কোমারোর সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল রাজকুমারী মাকোর। কিন্তু রাজকুমারীর মাকোর হবু শাশুড়ির অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তা পিছিয়ে যায়। কেই কোমারোর মা তার সাবেক প্রেমিকের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে তা শোধ দিতে পারেননি। তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তাকে দেউলিয়াও ঘোষণা করা হয়। এ কারণে জনরোষের মুখে সে সময় তাদের বিয়ে পিছিয়েছিল বলে জাপানের একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সে সময় গুঞ্জন উঠেছিল যে কোমারোর মা তার সাবেক বাগদত্তের কাছ থেকে কোমরোকে নিউইয়র্কে পড়তে পাঠানোর জন্য অর্থ নিয়েছেন। তবে ওই অর্থ তিনি ঋণ নাকি উপহার নিয়েছিলেন তা জানা যায়নি। কোমারোর সঙ্গে রাজকুমারী মাকোর বাগদানের মাত্র দুমাস পরই এই বিতর্ক সামনে আসে। এরপর তাদের বিয়ে স্থগিত হয়ে যায়।

২০১৮ সালে কোমারো আইন নিয়ে পড়াশোনা করতে নিউইয়র্ক চলে যান। গত তিন বছরের মধ্যে এই প্রথমবার গত জাপানে এসেছেন কোমারো।

২৬ অক্টোবর বিয়ে নিবন্ধন করার পর তারা সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানা গেছে। যেহেতু তাদের বিয়ে নিয়ে জাপানের অনেক মানুষের বিরূপ মনোভাব রয়েছে তাই বিয়েতে কোনো ঐহিত্যবাহী আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয়নি বলে জাপানের এক সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে।

জাপানের ক্রাউন প্রিন্সের মেয়ে এবং সম্রাট নারুহিতোর ভাতিজি রাজকুমারী মাকো রাজপরিবারের তরফ থেকে যে এককালীন ১৬০ মিলিয়ন ইয়েন নিতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। রাজপরিবারের বাইরে কোনো রাজকুমারী বিয়ে করলে তাকে এককালীন অর্থ দেওয়ার রীতি আছে জাপানি রাজপরিবারে।

এদিকে, রাজকুমারী পোস্ট ট্রমাটিক ডিসঅর্ডারে ভুগছেন বলে রাজপরিবারের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

বিয়ের পর চলতি মাসের শেষের দিকে তারা নিউইয়র্কে গিয়ে সংসার পাতবেন বলে জানা গেছে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর