বরগুনায় যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন করে গর্ভের দুই মাসের সন্তানকে হত্যার অভিযোগে পুলিশ সদস্য মো. তাজুল ইসলাম রুবেলকে (২৬) জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।
মো: তাজুল ইসলাম রুবেল দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর মঙ্গলবার সকালে ওই ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক মো. হাফিজুর রহমান জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। রুবেল পিরোজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।
জানা যায়, রুবেল বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের লেমুয়া গ্রামের মোস্তফা গাজীর ছেলে। ২০২১ সালের ৫ আগস্ট ছুটিতে বাড়িতে এসে চাকরির প্রোমোশনের জন্য স্ত্রী সুমি আকতারের নিকট ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। স্ত্রী যৌতুক দিতে অস্বীকার করলে রুবেল উত্তেজিত হয়ে তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর তলপেটে লাথি মারে। স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গর্ভের দুই মাসের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। রুবেলের শাশুড়ি হেলেনা বেগম বরগুনা থানায় ২০২১ সালের ১০ আগস্ট মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে ১ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা করলে তদন্ত শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর ওই ট্রাইব্যুনাল তাজুল ইসলাম রুবেলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে।
রুবেলের স্ত্রী সুমি আক্তার পিরোজপুর পুলিশ সুপার বরাবরে ৭ ফেব্রুয়ারী মামলার বর্ণনা দিয়ে রুবেলের বিরুদ্বে লিখিত অভিযোগ দেয়। বাদী হেলেনা বেগম বলেন, আমি মামলা করার পর আমার জামাতা রুবেল আমাকে ও আমার মেয়েকে বিভিন্ন প্রকার হয়রানি ও হুমকি দিয়ে আসছে। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বরিশাল ডিআইজি অফিসে নেয়। সেখানে আমরা রুবেলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার পরে পুলিশ রুবেলের বিরুদ্বে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়নি। আমার মেয়েকে নির্যাতন ও গর্ভের সন্তান হত্যাকারী রুবেলের বিচার চাই।
এদিকে রুবেল কোর্ট বারান্দায় পুলিশের সামনে উচ্চ স্বরে চিৎকার দিয়ে বাদীর আইনজীবীকে গালমন্দ করেন। তিনি বলেন, ‘জামিনে মুক্তি পেয়ে পিরোজপুর থানায় মামলায় জড়িত করে দেব। সুমিকে তালাক দেব।’ এসময় কোর্ট পুলিশ রুবেলকে শান্ত করে।
পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইদুর রহমান মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, তাজুল ইসলাম রুবেল জেল হাজতে যাওয়ার অফিসিয়াল কোনো তথ্য পেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন
