যাত্রাবাড়ীতে মা-ছেলে খুন; খুনির নোটে খুনের বর্ণনা

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে একটি বাসায় খুন হয়েছেন রোমা আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূ ও তার দেড় বছরের ছেলে রিসাদ। লাশ উদ্ধারের সময় পাশে মিলেছে একটি ডায়েরি, যেখানে তাদের হত্যার কারণ উল্লেখ করে গেছেন পলাতক স্বামী আবদুল অহিদ। ডায়েরির পাতায় লাল কালিতে লেখা- ‘আমার স্ত্রীর সঙ্গে ফ্রান্সপ্রবাসী সোহাগের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। কষ্ট সইতে না পেরে ওদের খুন করলাম।’

ডায়েরির লেখাটি অহিদের বলে পুলিশকে নিশ্চিত করেছেন তার বাবা-মা। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনার পর থেকে অহিদ পলাতক। পরকীয়া কি না তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অহিদ আউটসোর্সিংয়ের পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফরমে বিভিন্ন জুয়া খেলার সঙ্গে জড়িত। মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, সোমবার (৩০ আগস্ট) রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার মীরহাজিরবাগের ১৯২ নম্বর বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় অহিদকে একমাত্র আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত রোমার মা রেবা আক্তার। ঘটনার পর থেকে অহিদকে গ্রেফতারে থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি, র‌্যাব অভিযান চালাচ্ছে।

ডিএমপির ওয়ারি বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘অহিদ আউটসোর্সিংয়ের কাজ করেন। পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফরমে বিভিন্ন জুয়া খেলার সঙ্গে জড়িত। পারিবারিকভাবে তারা তেমন সচ্ছল ছিলেন না। ফলে একটি কক্ষের মাঝখানে কাপড় টানিয়ে একপাশে অহিদ স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকতেন, অন্য পাশে তার বাবা-মা থাকতেন। অহিদ সন্দেহ করতেন তার স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িত। আর এ বিষয়টি নিয়েই স্ত্রীর সঙ্গে তার ঝগড়া লেগেই থাকত। তবে সোমবার রাতে স্ত্রী ও ছেলেকে হত্যার সময় বিশেষ কৌশল অবলম্বন করেন অহিদ। ঘটনাস্থলে রক্তমাখা হাতুড়ি থাকায় আমরা ধারণা করছি বালিশচাপা দিয়ে হত্যার পর হাতুড়িপেটা করা হয়েছে। একই কক্ষে অহিদের বাবা-মা ঘুমানো থাকলেও তারা বিষয়টি বুঝতে পারেননি।’

যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারে মা-ছেলের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের সময় একটি ডায়েরি পাওয়া গেছে। ওটা দেখে মনে হচ্ছে অহিদ একাই জড়িত। তবে আমরা অহিদের বাবা-মাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে তারা জড়িত নন। এমনকি স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক কলহের বিষয়ে অহিদকেই দোষারোপ করছেন বাবা-মা। অহিদ যেহেতু পলাতক তাকে গ্রেফতার করতে পারলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।’

 

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন