যক্ষ্মা রোগীদের সাড়ে ৪ ভাগ কোভিড পজিটিভ

দেশে টিবি (যক্ষ্মা) রোগীদের মধ্যে আরটিপিসিআর পরীক্ষায় কোভিড-১৯ শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।

এছাড়া টিবি রোগীদের মধ্যে এইচআইভি/এইডসে আক্রান্তের হার শূন্য দশমিক ১ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি হাজারে ১ জন যক্ষ্মা রোগী এইডসে আক্রান্ত।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিনের (নিপসম) জরিপে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সোমবার সকালে নিপসমের সভাকক্ষে আয়োজিত জরিপের ফলাফল প্রকাশ এসব তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও জরিপের প্রধান গবেষক অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের টিবি-ল্যাপ্রোসি অপারেশন প্ল্যানের সৌজন্যে এবং গ্লোবাল ফান্ডের অর্থায়নে পরিচালিত এই জরিপ ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মো. খুরশীদ আলম এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিতি ছিলেন টিবি-ল্যাপ্রোসি অপারেশন প্ল্যানের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলাম।

এ সময় জানানো হয়, দেশের মোট জনগোষ্ঠীর শূন্য দশমিক শূন্য এক শতাংশ মানুষ এইচআইভি/এইডসে আক্রান্ত। তবে দেশে টিবি রোগীদের মধ্যে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা কত সেই তথ্য জানতেই এই জরিপ করা হয়।

মোট ১২ হাজার ৫৩ জন টিবি রোগীর ওপর এই জরিপ পরিচালিত হয়। সেখানে ১২ জনের শরীরে এইচআইভি শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই পরিবহণ শ্রমিক। তবে ৪ জন গৃহিণী রয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ ৫ নারী। তবে ১৫ বছরের নিচের কোনো টিবি রোগীর শরীরে এইচআইভি পাওয়া যায়নি। ১৫ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে রয়েছে ১ জন; ২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সিদের মধ্যে রয়েছে ২ জন; ৩ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের মধ্যে রয়েছে ৪ জন; ৪৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সিদের মধ্যে রয়েছে ৩ জন; এবং ৫৫ বছরে ঊর্ধ্বে বয়সিদের মধ্যে রয়েছে ২ জন। এইচআইভি আক্রান্তদের সবাই ফুসফুসজনিত যক্ষ্মায় ভুগছেন।

জরিপের ফলাফলে আরও দেখা যায়, যক্ষ্মা ও আইচআইভির পাশপাশি এদের ৪৪ দশমিক ৮ শতাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, ১৭ দশমিক ২ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, ১৫ দশমিক ৪ শতাংশের অ্যাজমার জটিলতা রয়েছে, ৯ দশমিক ৮ শতাংশ সিওপিডিতে (ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমনারি ডিজিজ) ভুগছেন এবং ২ দশমিক ৩ শতাংশের অন্যান্য মৃত্যুঝুঁকি যুক্ত রোগ রয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, টিবি রোগীদের এমনিতেই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তারপরে যদি তারা এইচআইভিতে আক্রান্ত হন তাহলে ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তাই মানুষের জীবন বাঁচাতে এ ধরনের জরিপ নিয়মিত হওয়া প্রয়োজন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলাম বলেন, দেশের টিবি ও এইচআইভি নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের জরিপ পরিচালন অর্থায়ন অব্যাহত থাকবে। এতে দেশে গবেষণার পরিসর বাড়বে এবং রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সহজ হবে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর