মোহনপুরে সাবেক ইউপি সদস্য হাবিবাকে ‘গ্রেপ্তার নাটক’ এর নেপথ্যে… 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য শেখ হাবিবাকে গ্রেপ্তারের পেছনে রাজনৈতিক চক্রান্ত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শেখ হাবিবার পরিবারের দাবি, রাজনৈতিক রোষানলে পড়েই মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে পুলিশের দাবি, থানায় এসে পুলিশের সঙ্গে খারাপ আচরণের জন্য তাকে আটক করা হয়। পরে ডলি বেগম নামের এক নারী দায়ের করা প্রতারণা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার (২০ জুলাই) জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।

আর স্থানীয় প্রভাবশালীদের দাবি, পুলিশের সাথে খারাপ আচারণ ও প্রতারণা মামলায় তাকে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে। এর সাথে রাজনৈতিক কোন ব্যক্তি জড়িত নয়।

শেখ হাবিবার পরিবারের অভিযোগ, অভিযোগ রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্যে মো. আয়েন উদ্দিনের জলসাঘর ও জমি দখল নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়ায় কৌশলে মিথ্যা প্রতারণার মামলা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় একটি পারিবারিক দ্বন্দ্ব সমাধানের জন্য থানায় গেলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। অভিযোগ উঠেছে, গ্রেপ্তারের পর এক নারীকে দিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করান সংসদ সদস্যের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী একরামুল হক। এ মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শেখ হাবিবার স্বামী চা-বিক্রেতা মাসুদ রানা বলেন, আমি চা বিক্রি করি। সারাদিন দোকানে থাকি। গত মঙ্গলবার স্ত্রী শেখ হাবিবা জানায়, বিকেলে থানায় যাবে। দরবার আছে। এরপর রাতে বাড়ি এসে তাকে পাইনি। ফোন করে ফোন বন্ধ পাই। পরদিন (বুধবার) সকালে থানা থেকে ডিউটি অফিসার ফোন করে জানান, পুলিশের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করায় হাবিবাকে থানায় আটকে রাখা হয়েছে। শুনেছি মারপিটও করেছে। পরে থানায় যাই। ওসি ছেড়েও দিতে চেয়েছিলেন। পরে দেখি এমপির সাবেক পিএস দু’জন নারীকে নিয়ে থানায় এসেছেন। তাদের একজন ডলি বেগমকে দিয়ে প্রতারণার মামলা করান।

মাসুদ রানা বলেন, তারা মামলায় অভিযোগ করেছেন- হাবিবা নাকি দেড় লাখ টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছে। এ অভিযোগ একেবারেই মিথ্যা। ডলি বেগম এমপির লোকদের ঘনিষ্ঠ। এমপির লোকেরা যা বলবে তা-ই করবেন। এমপির পিএস তাকে থানায় এনে মামলা করিয়েছেন। এমপির বিরুদ্ধে পত্রিকায় ও টিভিতে বক্তব্য দেয়ায় তাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটা চক্রান্ত। সাজানো নাটক। ডলির কাছ থেকে হাবিবা কোনো টাকা নেয়নি।

মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, হাবিবা থানায় এসে পুলিশের এএসআই সোলায়মানকে গালিগালাজ ও হুমকি দিয়েছেন। পুলিশকে মারতে আসেন তিনি। এ কারণে ১৫১ ধারায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার নিজ এলাকার এক নারী প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে এমপি আয়েনের সাবেক পিএস একরামুল বলেন, ‘সামাজিক ও রাজনৈতিক নানা প্রয়োজনেই আমি থানায় যাই। ডলি যখন হাবিবার বিরুদ্ধে মামলা করেন, তখন আমি থানায় ছিলাম। আমি ডলিকে থানায় নিয়ে গিয়ে মামলা করিয়েছি, এটা মিথ্যা। ডলির সঙ্গে হাবিবার পুরনো দ্বন্দ্ব ছিল।’

এএইচ/এস