পুঠিয়ায় মেয়রের নামে ধর্ষণের মামলা প্রত্যাহার না করায় পাল্টা ৮ মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর পুঠিয়া পৌরসভার মেয়র আল মামুন খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা প্রত্যাহার না করায় পাল্টা ৮টি মামলা দায়ের, হুমকি-ধামকি, নজরদারির অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী নারী। ওই নারীর দাবি, এতে করে তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মেয়র আল মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়েরের পর ভুক্তভোগি কলেজ ছাত্রী ও তার পিতা-মাতার নামে পৃথক ৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর মামলাগুলো দায়ের করেছেন মেয়রের লোকজন। এর মধ্যে তার সম্পর্কের চাচা আতাউর রহমান রাজশাহীর এক্সিকিটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-২ এ ১০৭ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্ত করা হয় ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী ও তার বাবা-মাকে। একই আদালতে ও একই ধারায় মামলা করেন মেয়রের মামাতো ভাই সাদ্দাম হোসেন। অপরটি করেন মেয়রের সহযোগী আব্দুর জব্বার চান্দু। সেই সাথে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জেবের মোল্লাও বাদি হয়ে একটি মামলা করেন।

ভুক্তভোগীকে তালাক দেয়া স্বামী রবিউল ইসলাম আমলী আদালত-১ এ একই ধারায় তাদের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা দায়ের করেছেন। আর প্রতিটি মামলায় আলাদা আলাদা হাজির হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। এরপর পৌরসভার একজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্যসহ আরো দুইজন মিলে আলাদা তিনটি মামলা আদালতে দায়ের করেছেন। মামলাকারীদের দাবি, মেয়রের সাথে সুসম্পর্ক থাকায় ওই মেয়ে আমাদের নামে হয়রানীমুলক মিথ্যা মামলা করেছেন। তাই আমরাও ওই মেয়ে ও তার পরিবারের নামে আদালতে পাল্টা পৃথক মামলা করেছি।

ভুক্তভোগি কলেজ ছাত্রী বলেন, মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর তিনি আটক হোন। এরপর তিনি জামিনে বের হয়ে তার সহযোগিদের দিয়ে আমার ও আমার বাবা-মার নামে ১০৭ ধারায় এখন পর্যন্ত ৮ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আরো কয়েকটি মামলা করা হবে বলে মেয়রের সহযোগিরা প্রতিনিয়ত আমাদের হুমকি দিচ্ছে।

ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীর মা বলেন, আমরা খুবই অসহায়। নিজের কোনো জমিজমা নেই। একমাত্র মেয়ে ও স্বামীকে নিয়ে সরকারের দেওয়া ঘরে বসবাস করি। এর মধ্যে পৌরসভার মেয়র আমাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে মেয়ের সর্বনাশ করেছেন। এর বিচার চাইতে গিয়ে এখন মেয়র মামুনের লোকজন আমাদের নামে একের পর এক হয়রানি ও মিথ্যা মামলা করছে।

এ ব্যাপারে পুঠিয়া পৌরসভার সদ্য বরখাস্তকৃত মেয়র আল মামুন খান ভুক্তভোগী পরিবারের নামে একাধিক মামলা দায়েরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি জেলে থাকার সময় ওই মেয়ে কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা ও হয়রানিমুলক অভিযোগ করেছেন। সেই সাথে মেয়েটি তাদের জেল জরিমানার হুমকি দিয়ে আসছেন। সে কারণে সম্মানরক্ষার্থে হয়তো তারা মেয়েটির পরিবারের নামে পাল্টা মামলা করেছেন। আমার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার সাথে ওই মামলাগুলোর কোনো যোগসাজস নেই।

পুঠিয়া পৌর মেয়র, সদর এলাকার স্বামী পরিত্যাক্তা এক কলেজ ছাত্রীকে (২৪) চাকরির প্রলোভনে নিয়মিত ধর্ষণ করতেন। একসময় ভুক্তভোগী প্রতিবাদ করেন। এতে মেয়রের লোকজন তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। একপর্যায়ে ওই নারী বাদি হয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর মেয়রের বিরুদ্ধে পুঠিয়া থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

জি/আর