মৃত্যুর পর আমার সব সৃষ্টি যেন ধ্বংস করা হয়: কবীর সুমন

ফেসবুকে নিজের ইচ্ছাপত্র (উইল) পোস্ট করলেন ভারতের গীতিকার, সুরকার, গায়ক এবং সাবেক এমপি কবীর সুমন। সুমন শুক্রবার তার ফেসবুক ওয়ালে নিজের প্যাডে লেখা ইচ্ছাপত্রটি আপলোড করেছেন। যেখানে তিনি বলেছেন, মৃত্যুর পর তার সব সৃষ্টি যেন ট্রাকে করে নিয়ে গিয়ে ধ্বংস করে কলকাতা পৌরসভা।  খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

‘সকলের অবগতির জন্য’ শিরোনামে নিজের হাতে লেখা ইচ্ছাপত্রে সুমন আরও লিখেছেন, ‘আমার মৃতদেহ যেন দান করা হয় চিকিৎসাবিজ্ঞানের কাজে।

কোনও স্মরণসভা, শোকসভা, প্রার্থনাসভা যেন না হয়। আমার সমস্ত পাণ্ডুলিপি, গান, রচনা, স্বরলিপি, রেকর্ডিং, হার্ড ডিস্ক, পেনড্রাইভ, লেখার খাতা, প্রিন্ট আউট যেন কলকাতা পৌরসভার গাড়ি ডেকে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয় সেগুলি ধ্বংস করার জন্য।

আমার কোনও কিছু যেন আমার মৃত্যুর পর পড়ে না থাকে। আমার ব্যবহার করা সব যন্ত্র, বাজনা, সরঞ্জাম যেন ধ্বংস করা হয়। এর অন্যথা হবে আমার অপমান’।

নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় ‘তোমাকে চাই’ অ্যালবাম দিয়ে বাংলা আধুনিক গানের জগতে আবির্ভাব হয়েছিল সুমনের।  ওই গানে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছিলেন তিনি। মোড় ঘোরানো আধুনিক বাংলা গানের জনক হিসাবে তাকেই গ্রহণ করেছিল বাঙালি।

কালক্রমে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। জড়িয়ে পড়েন সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সঙ্গে। পরে তৃণমূলের টিকিটে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে এমপিও হন।

তৃণমূলের সঙ্গে তার সম্পর্কে একটা সময় টানাপড়েন চললেও আপাতত তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থক এবং বিজেপির কড়া বিরোধী।

আপাতত বাংলা খেয়াল নিয়ে চর্চা করছেন। পাশাপাশি ফেসবুকে নিজের আঁকা ছবিও পোস্ট করছেন। এরই মধ্যে আচমকা কেন এই ইচ্ছাপত্র, তা অবশ্য তিনি জানাননি।

সুমন আরও জানিয়েছেন, ‘সজ্ঞানে, সচেতন অবস্থায়, স্বাধীন ভাবনাচিন্তা ও সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে আমি জানাচ্ছি, আমার কোনও অসুখ করলে, আমায় হাসপাতালে ভর্তি হতে হলে, অথবা আমি মারা গেলে, আমার সম্পর্কিত সব কিছুর, প্রতিটি বিষয় ও ক্ষেত্রে দায়িত্বগ্রহণ এবং সিদ্ধান্তগ্রহণের অধিকার থাকবে একমাত্র মৃন্ময়ী তোকদারের (মায়ের নাম প্রয়াত প্রতিমা তোকদার, বাবার নাম দেবব্রত তোকদার)।  অন্য কারওর কোনও অধিকার থাকবে না এই সব বিষয় ও ক্ষেত্রে’।

সুমনের পোস্টের নিচে মৃন্ময়ী লিখেছেন, তিনি সুমনের দেয়া ওই দায়িত্ব স্বীকার করে নিচ্ছেন। সূত্র: যুগান্তর