মৃত্যুদণ্ড রহিত ও সমকামীদের অধিকারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে শক্ত অবস্থান নেবে বাংলাদেশ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:  মৃত্যুদণ্ড রহিত ও সমকামীদের অধিকারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে শক্ত অবস্থান নেবে বাংলাদেশ। আগামী ১৪ মে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের মানবাধিকার রিপোর্ট যা ‘ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিও’ নামে পরিচিত সেটির শুনানি হবে। যেখানে মৃত্যুদণ্ড রহিত ও সমকামিতার অধিকার ছাড়াও বাংলাদেশের নারী অধিকার, নারী নির্যাতন, বাক স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের অধিকার, পুলিশি নির্যাতন, বিচার-বহির্ভূত হত্যা, গুম ও নির্যাতন ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রশ্নের জবাব দেবে সরকার।

শুনানিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং পর্যালোচনায় র‍্যার্পোর্টিয়ারের দায়িত্ব পালন করবে রুয়ান্ডা, আফগানিস্থান ও ইউক্রেন।

এরই মধ্যে জার্মানি ও উরুগুয়ে বিচার-বহির্ভূত হত্যা, খসড়া আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা, গুম ও নির্যাতন, জন্ম নিবন্ধন ইত্যাদি নিয়ে আগাম প্রশ্ন করেছে যেগুলোর উত্তর বাংলাদেশকে দিতে হবে।

এ বিষযে জানতে চাইলে একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে অনেকের অভিযোগ আছে এবং আমরা তাদের অভিযোগের জবাব দিতে প্রস্তুত।’

সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে আলোচনা করে সরকার গত ফেব্রুয়ারিতে ২০১৩-১৭ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানবাধিকার সাফল্য ও চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় রিপোর্ট জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে জমা দিয়েছিল। তারই শুনানি হবে ১৪ মে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশ পপুলারিজম বা জনপ্রিয় মতবাদ ধারণ করে না এবং সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আমরা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। এটি একটি বিরাট বড় চ্যালেঞ্জের কারণে বাংলাদেশ অস্থিতিশীল হওয়ার ঝুঁকি ছিল। সে কারণে বলা যায় মানবিকতা ও মানবাধিকার বিষয়ে আমাদের রেকর্ড খুবই ভালো।’

তিনি বলেন, ‘এটা সত্য যে আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে, কিন্তু পৃথিবীতে এমন কোনও দেশ নেই যার সীমাবদ্ধতা নেই। এখন প্রশ্ন হলো আমরা এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি কিনা এবং এই বিষয়টি পৃথিবীর অন্যান্য দেশ জানতে চায়।’

বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো মানবাধিকার রিপোর্ট বা ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিও রিপোর্ট জমা দিয়েছিল ২০০৯ সালে এবং এরপরে রিপোর্টটি জমা দিয়েছির ২০১৩ সালে।

২০১৩ সালের শুনানিতে বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে ১৯৬টি সুপারিশ করা হয়েছিল এবং তারমধ্যে বাংলাদেশ ১৯১টি মেনে নিয়েছিল। বাকি পাচঁটি ছিল মৃত্যুদণ্ড রহিত ও সমকামিতার অধিকার বিষয়ক এবং সেগুলি বাংলাদেশ মানেনি।

এ বিষযে একজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ড বন্ধ আমরা করবো না কিন্তু নিরপরাধীরা যাতে এর শিকার না হয় তার ব্যবস্থা আমাদের সিস্টেমে আছে।

সমকামীদের অধিকার বিষয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর ৩৭টি দেশ এটি সমর্থন করে না এবং আমাদের সমাজ এটির জন্য এখনও প্রস্তুত নয়।

এবারের রিপোর্টে সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩-২০১৭ পর্যন্ত নিম্ন আদালতে এক হাজার ১১৯ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয় কিন্তু হাইকোর্ট ডিভিশন ১৩০ জন ব্যাক্তির ফাঁসির আদেশ বহাল রাখে এবং এই সময়ে মাত্র ১৭ জনের ফাঁসি হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন বিষয়ে বলা হয়েছে, গত পাচঁ বছরে তারা এক হাজার ৬৫৫টি মামলা করেছে। এর মধ্যে ৬২২ জন সরকারি কর্মকর্তার দোষ প্রমাণিত হয়েছে।

 

 

বাংলা ট্রিবিউন