মিষ্টি বাঙ্গি উদ্ভাবন করলেন রাবি অধ্যাপক মনজুর

রেদওয়ানুল হক বিজয়:

সোনালি বাঙ্গি। ছোট অবস্থায় দেখতে মাল্টা বা কমলার মতো। খেতে অনেক মিষ্টি। গায়ের রঙের জন্য এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘সোনালি বাঙ্গি’। আট বছরের প্রচেষ্টায় এই বাঙ্গি উদ্ভাবন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মনজুর হোসেন।

বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের বাঙ্গি চাষ হয়ে থাকে। কুমড়াগোত্রীয় গ্রীষ্মকালীন এই ফল খেতে বালি বালি। স্বাদেও মিষ্টি নয় এবং পাকার আগেই ফেটে যায়। কিন্তু নতুন উদ্ভাবিত এই সোনালি বাঙ্গির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি চিনির মতো মিষ্টি এবং ফাটে না।

প্রথম অবস্থায় ফলটি হয় গাঢ় সবুজ রঙের। আকৃতি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রং পরিবর্তন হয়ে সোনালি বর্ণ ধারণ করে। ছোট অবস্থায় দেখতে মাল্টা বা কমলার মতো এবং পরিপূর্ণ বাঙ্গিগুলো দেখতে একটি ছোট আকারের মিষ্টি কুমড়ার মতো। প্রতিটি বাঙ্গিই আধা কেজি থেকে পৌনে এক কেজি। আর এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি, ভিটামিন-এ এবং আয়রন বিদ্যমান।

এই বাঙ্গির চাষ পদ্ধতিও ভিন্ন। মাটি থেকে চার-পাঁচ ফুট উচ্চতায় মাচা করে ফলটি চাষ করতে হয়। চাষের জন্য আলাদা কোনো মাটির প্রয়োজন নেই। সাধারণ বাঙ্গি যে মাটিতে চাষ হয়, সেই মাটি হলেই চলবে।

চাষের খরচ সাধারণ বাঙ্গির তুলনায় কিছুটা বেশি। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ পড়বে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। জাপানে এক ধরনের মিষ্টি জাতের বাঙ্গি চাষ হয়। অধ্যাপক মনজুর হোসেন তাঁর জাপানের বন্ধু কাতো কেউকির পরামর্শে বাংলাদেশে মিষ্টি বাঙ্গি চাষের উদ্যোগ নেন। বেশ কয়েকবার তিনি পরীক্ষামূলকভাবে চাষও করেন।

কিন্তু মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী না হওয়ায় বীজগুলো নষ্ট হয়ে যায়। এর পর থেকেই বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী মিষ্টি জাতের বাঙ্গি উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা শুরু করেন তিনি। দীর্ঘ আট বছর পর মেলে সাফল্য।

জাপান মিষ্টি জাতের বাঙ্গি দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে। যদি উত্পাদন বাড়ানো যায় তাহলে কৃষকরা যেমন লাভবান হবে, তেমনি রপ্তানির মাধ্যমে অনেক অর্থও আয় হবে বলে আশা করছেন অধ্যাপক মনজুর হোসেন। তিনি বলেন, ‘বাঙ্গি যে কতটা মিষ্টি হতে পারে সেটা অনেকে ভাবেওনি। ’

স/শ