মান্দায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাল স্বাক্ষরে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও জাল স্বাক্ষরে টাকা আত্মসাৎ ও অবৈধভাবে কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে নওগাঁর মান্দা উপজেলার ৪৬নং খুদিয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আছমা আরা বানুর বিরুদ্ধে।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও নওগাঁ জেলা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সদস্য জামিল হোসেন প্রামানিক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে গত ২৪ আগষ্ট এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
গত বুধবার বিষয়টি তদন্তের জন্য অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি বিদ্যালয়ে আসেন। এ ব্যপারে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ০৫/১০/১৬ইং তারিখে ওই বিদ্যালয়ে তদন্তে গিয়ে শিক্ষক, কর্মচারী, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, ০৭নং প্রসাদপুর ইউ’পির ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার শরিফ উদ্দিন বাচ্চু ও এলাকাবাসীর বক্তব্য শুনেছি এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু বক্তব্য লিখিত আকারে নিয়েছি বলে তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোসাব্বির হোসেন জানান।

এতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের অনেকাংশে সত্যতা পাওয়া যায় এবং যে নতুন কমিটি হতে যাচ্ছে তার কোন রেজুলেশন ও  নোটিশ পাওয়া যায় নাই। আগামী দুই এক দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। আর এ ব্যাপারে মূল সিদ্ধান্ত নিবেন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ ক্রয়, রিটার্ণ, উপবৃত্তির চাহিদাপত্র সহ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জামিল হোসেন ও সহ-সভাপতি আবুল কাশেমের স্বাক্ষর জাল করে প্রধান শিক্ষক আছমা আরা বানু ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এছাড়া ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা তার এ ধরনের অপকর্মের প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষক অমান্য করে এবং পুরোনো কমিটিকে না জানিয়ে নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটির পাঁয়তারা করছেন।

এমতাবস্থায় ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখিত অভিযোগের দাবী জানানো হয়। ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জামিল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক ব্যবস্থাপনা সদস্যের সঙ্গে কোন প্রকার আলোচনা না করেই সম্পূর্ন স্বেচ্ছাচারী ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

এলাকাবাসীর মুখেও একই কথা শোনা যায়। আমার এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ-সভাপতি আবুল কাশেমের স্বাক্ষর জাল করে বিভিন্ন বিল ভাউচার দেখিয়ে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং তদন্তকালীন সময় সহ-সভাপতি আবুল কাশেম তার লিখিত বক্তব্যে তার জাল স্বাক্ষরের বিষয় বর্ণনা সহ উল্লেখ করেন।

অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আছমা আরা বান সিল্কসিটি নিউজকে ু বলেন, আমার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা। তবে নতুন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আগের কমিটিকে জানানো হয়নি এবং নতুন কমিটির জন্য অনুমোদিত দাতা সদস্য আবুল হোসেন মন্ডলের নিজ নামীয় কোন সম্পত্তি বিদ্যালয়ের নামে দেওয়া নেই। এটা আমি ভুল বশতঃ করেছি। নতুন কমিটি গঠনের কোন রেজুলেশন ও নোটিশ তদন্ত কমিটিকে দিতে পারিনি। যা আমি আমার লিখিত বক্তব্যে স্বীকার করেছি।

এ ব্যপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান বলেন, এই অভিযোগের কিছুদিন পূর্বে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেজাউল করিম একটি অভিযোগ করেছিলেন এবং তার ভিত্তিতে আমি ওনাকে শোকচ করেছিলাম। পুনরায় এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে; তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স/শ