‘মানুষটা প্রতারক’

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের চারপাশে ওয়াল স্ট্রিটের লোকজনের ভিড় দেখে হাসি চেপে রাখা যায় না। মানুষটা প্রতারক।’ সদ্য দায়িত্ব নেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে ডেমোক্র্যাট সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স এই মন্তব্য করেন। ট্রাম্পের ওয়াল স্ট্রিট সংলগ্নতা নিয়ে সিএনএন-এর এক প্রশ্নের জবাবে স্যান্ডার্স এমন মন্তব্য করেন।

 

রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী থেকে প্রেসিডেন্ট হওয়া ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল, তিনি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরামহীম স্বেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন। তবে  ইন্টারসেপ্ট অসমর্থিত সূত্রের বরাত দিয়ে সম্প্রতি খবর দিয়েছে, মনোনীত অর্থমন্ত্রীসহ ট্রাম্প প্রশাসনের অনন্ত ছয়জন ব্যক্তি ডেমোক্র্যাট ঘনিষ্ঠ গোল্ডম্যান সাক্স থেকে নিয়োগ পেয়েছেন। এই গোল্ডম্যান সাক্স সেই আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠান ২০০৭৮-২০০৮ সালের মার্কিন অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে যারা বন্ধকী সম্পদ থেকেই প্রায় ৪০০ কোটি ডলার লাভ করেছিল।

 

ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট হতে প্রার্থিতার জন্য হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন স্যান্ডার্স। নির্বাচনকে করপোরেট পুঁজির প্রভাবমুক্ত করার কথা বলেছিলেন তিনি। একেবারে জনগণের চাঁদা দিয়ে ক্যাম্পেইন করেছেন তিনি।  কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কাছে টাকা নেননি স্যান্ডার্স। সেই স্যান্ডার্সের অভিযোগ, ‘ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন। লাখ লাখ মানুষ তাকে ভোট দিয়েছে এই ভেবে যে, তিনি ওয়াল স্ট্রিটের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন। কিন্তু মন্ত্রিসভায় কোটিপতি ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত করে ডোনাল্ড ট্রাম্প মূলত ওয়াল স্ট্রিটের পক্ষে কাজ করছেন।’

 

তরুণ প্রজন্মের শিক্ষিত তরুণ উদারবাদীদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন স্যান্ডার্স। প্রাইমারির ফলাফলে এগিয়েও যাচ্ছিলেন একটু একটু করে। তবে এপি অনেকগুলো প্রাইমারি আর ককাস বাকি থাকতেই হিলারিকে নিশ্চিত প্রার্থী ঘোষণা করে। বাস্তবেও হিলারিই প্রার্থী হন। তবে সাড়া জাগানো বিকল্প সংবাদমাধ্যম উইকিলিসকস-এর ফাঁস করা ডেমোক্র্যাটিক কংগ্রেসের নথিতে দেখা যায়, একরকম জোর করে স্যান্ডার্সকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে।  রবিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর ‘স্টেট অব ইউনিয়ন’ অনুষ্ঠানে ভারমন্টের এই সিনেটর বলেন, ‘আমার মনে হয়, যারাই ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন, তারা ভেবেছিলেন এই মানুষটি শ্রমিকের পক্ষে দাঁড়াবে। আমার ধারণা, তিনি দেশের মধ্যশ্রেণি ও শ্রমিকশ্রেণির কাছে এই কথাটাই বেচেছেন।’

 

স্যান্ডার্সের কথার সমর্থন মিলেছে বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসেফ স্টিগলিস-এর এক মন্তব্যে। স্টিগলিৎজের মতে, ট্রাম্প রিগ্যান আমলের পশ্চাৎপদ অর্থনীতিকেই ঊর্ধ্বে তুলে ধরছেন। তবে ট্রাম্প তার অর্থনীতিতে আরও দুটি মারাত্মক অস্ত্র যুক্ত করেছেন – চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ এবং লাখো মানুষের স্বাস্থ্যসেবা ছিনিয়ে নেওয়া। স্টিগলিৎজের দাবি, ট্রাম্প যে ক্ষুব্ধ মার্কিনিদের ভোটে জয়ী হয়েছেন, তারাও তার ওই আগ্রাসী অর্থনীতির শিকার হবেন। ট্রাম্প ওই ভোটারদের ক্ষোভকে ব্যবহার করেছেন বলে উল্লেখ করেন এই খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন