মাত্র ৩ জন শিক্ষক দিয়ে চলছে সাপাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঠ দান

প্রদীপ সাহা, সাপাহার:

শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গেপড়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে সাপাহার উপজেলা সদরের নারী শিক্ষার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ সাপাহার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। বর্তমানে মাত্র ৩ জন শিক্ষক দিয়ে চলছে সাপাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঠ দানের কর্যক্রম। এ অবস্থায়  শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পরেছেন। দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষক সংকঠ লেগেই রয়েছে এ বিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীদের কলরবে এক সময় জমজমাট ও সরগরোম বিদ্যালয়টি এখন নিস্তেজ হয়ে পড়েছে।

 

বিদ্যালয়ের অবকাঠামো বাহিরের আধিক্য অতীতের তুলনায় বাড়লেও শিক্ষার জৌলস শিক্ষার্থীর উপস্থিতি প্রায় জিরো কোঠায় ঠেকতে চলেছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ১০ জন শিক্ষকের পদের বিপরীতে কর্মরত শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৫ জন তার মধ্যেও আবার মাতৃত্বকালীন ছুটি সহ অন্যান্য বিষয়ে ছুটিতে রয়েছেন দু’জন ।বর্তমানে মাত্র ৩ জন শিক্ষক দিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের পাঠ দান। এ ছাড়া একসময় যেখানে সাড়ে ৮ শত শিক্ষার্থীর কলরবে মুখরিত হয়ে থাকত পুরো বিদ্যালয় ক্যাম্পাস বর্তমানে সেখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র  ১‘শ ৪০ জনে।

 
জানা গেছে, অতীতে এলাকায় নারী শিক্ষায় ব্রতী হয়ে নারী শিক্ষার প্রসার ঘটানোর জন্য এলাকার শিক্ষানুরাগী প্রবীন ব্যক্তি আলহাজ্ব ডাঃ তাহের উদ্দীন আহম্মেদ ১৯৭৩ সালে উপজেলা সদরে এক খন্ড জমির উপর একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এর পর বিদ্যালয়টি এলাকায় প্রথম নারী শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পাওয়ায় দিন দিন শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়তেই থাকে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ও শিক্ষার গুনগত মান বিশ্লেষন করে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুসাইন মুহাম্মাদ এইচ এম এরশাদ গত ১৯৮৮ ইং সালে সাপাহারে রাষ্ট্রিয় এক সফরে এসে বিদ্যালয়টিকে সরকারী ঘোষনা করেন সে হতে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি এলাকায় নারী শিক্ষায় এক অগ্রণী ভূমিকা রেখে আসছে। সারা জেলায় হাতে গোনা দু’একটি সরকারী বিদ্যালয়ের মধ্যে সাপাহার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় একটি। বিদ্যালয়টি শুরু থেকে বেশ শুনাম ও জাঁক জমকের সাথে পরিচালিত হয়ে আসলেও দীর্ঘ প্রায় এক যুগ ধরে চরম শিক্ষক সংকটে ভুগছে।

 

দশ বছর ধরে বিদ্যালয়টিতে শূন্য রয়েছে গণিত শিক্ষকের মত একটি গুরুত্বপুর্ণ পদ। দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক সংকট লেগে থাকায় অভিভাবকগন তাদের মেয়েদের আর ওই বিদ্যালয়ে ভর্তি করছেন না।

 

এ বিষয়ে সদ্য যোগদানকৃত প্রদান শিক্ষক শ্যামল চাকীর সাথে কথা হলে অতন্ত দুঃখের সাথে জানান, সাপাহারের মানুষ শিক্ষানুরাগী হলেও সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মত গুরুত্বপুর্ণ একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি তাদের খবরদারী একটু হলেও কম। শিক্ষক বদলী ঠেকাতে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ, অভিভাবক কিংবা এলাকার কোন শিক্ষানুরাগী মহলের তৎপরতা না থাকায় এখানে কোন শিক্ষক যোগদান করার পর কয়েক দিনের মধ্যে অন্যত্র বদলী হয়ে চলে যায়। যার ফলে কোন কোন সময় শিক্ষকের পদ পূরণ হলেও স্বল্পসময়ে তা আবার সংকটে পরিণত হয়।

 

শিক্ষক সংকট সহ বিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করার জন্য তিনি মনোনিবেশ করলেও বর্তমানে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে তারও অন্যত্র বদলীর অর্ডার এসেছে তিনিও কয়েক দিনের মধ্যে এ বিদ্যালয় ছেড়ে অন্যত্র চলে যাবেন।

স/অ