মাটির হাড়িতে ২০ বছর ধরে মিশে আছে গোদাগাড়ীর শিল্পী রানীর সংসার

জেসমিন আরা ফেরদৌস:
গ্রামের নাম কুমারপাড়া। রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানার কুমোরদেরকে ঘিরে ছোট্ট একটি বসতি। তাদের ই একজন সংগ্রামী নারী শিল্পী রানী পাল। তিন সন্তানের জননী তিনি। দরিদ্র স্বামীর সাথে সংসারের হাল ধরতে ২০ বছর ধরে তিনি এই পেশায় নিয়োজিত।
গত ২৯ শে সেপ্টেম্বর তার বাসায় যেয়ে দেখা যায় ভাঙ্গাচোরা মাটির ঘরে বসে মাটির হাড়ি বানাচ্ছিলেন তিনি। কাজের ফাঁকেই জানান, ২০ বছর আগে বিয়ে হয়ে এসে স্বামীর বাড়িতে মৃৎশিল্পের কাজ শিখেন তিনি। আর এখানেই তার হাতে খড়ি। তার শশুড়বাড়িতে এই পেশা বংশ পরম্পরায় চলে আসছে। তার পরিবারের সকলেই এই পেশায় নিয়োজিত।
মাটির হাড়ি,কলস,চায়ের ভাড়,ফুলের টবসহ বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র তৈরী করেন তিনি। প্রতিদিন ২০-৩০ টি করে তৈরী করেন মাটির আসবাবপত্র। আর এসবের জন্য মাটি নিয়ে আসেন বাড়ির পিছনের নদীর পাড় থেকে তারপর সেই মাটিকে চাকের সাহায্যে বিভিন্ন আকৃতি দেন এই কারিগর। তারপর সেগুলো রোদে শুকাতে দেন। এবং সব শেষে কাঠ খড়ির সাহায্যে পুড়িয়ে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেন।
স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে এসব পণ্য বিক্রির জন্য পাঠানো হয়। তবে কখনো কখনো অনেকে বাসায় এসেও কিনে নিয়ে যায়। তিনি জানান যে সকল পণ্য বিক্রি হয় তা থেকে লাভ হয় না বললেই চলে। কোনরকমে খেয়ে পড়ে দিনাতিপাত করতে হয় তাদের। তাদের যে উপার্জন এতে সংসার চালানো খুব ই কঠিন হয়ে পড়ে।
তবে হাজারো অভাব অনটনের মধ্য দিয়েও তিনি তার মেয়দের স্কুলে পাঠান। স্বপ্ন দেখেন একদিন তার মেয়েরা অনেক বড় হবে এবং তাদের সুদিন আসবেই।
স/রি