মনিরুজ্জামান শেখ রাহুল এর কবিতা ”বন্ধুত্ব কী”

বন্ধুত্ব কী
মনিরুজ্জামান শেখ রাহুল

আমি সেদিন বের হয়েছিলাম,
একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে,
প্রকৃতির বার্তায় অজ্ঞ হয়ে
বন্ধুত্বের অর্থ বুঝতে।

বৃক্ষের সঙ্গে দেখা হলো
আমার সেই পথে,
কথাপোকথন হলো সেই
বৃক্ষের সাথে।

বৃক্ষকে বললাম, “ও ভাই, বন্ধুত্ব কী?”
বৃক্ষ বলল, “বন্ধুত্ব হলো
নিঃস্বার্থের সিক্ততা,
যেখানে নেই কোন তিক্ততা।”

তারপর প্রশ্ন করলাম সূর্যকে,
“প্রিয় সূর্য মামা,
বলতে পারো বন্ধুত্ব কী?”
সূর্য বলল, “বন্ধুত্বের ব্যাপ্তি
সর্ববৃহৎ আকার
আমার কিরণেও নেই
তেমন সম্ভার।”

তারপর সমুদ্রকে বললাম,
“তুমি কি জানো, বন্ধুত্ব কী?”
সমুদ্র বলল, স্রোতের ধারা যেমন বয়ে যায়
আমার অঙ্গ-প্রতঙ্গে,
বন্ধুত্ব বিপদকে রুখে দেয়
তারই সাহায্যের অঙ্গে।”

অতঃপর ভূমিকে বললাম,
“তুমি বলো তো, বন্ধুত্ব কী?”
ভূমি বলল, “যে বুঝে না আন্তরিকতার সুগন্ধ
তার বন্ধুত্বের দুই চোখ অন্ধ।”

কিছুক্ষন অন্তে গগনে মেঘ আসে,
মেঘকে বললাম, “বন্ধুত্ব কী?”
মেঘ বলল, “বন্ধুত্ব হলো
হাজার বর্ষের বিশ্বস্ততা,
সেখানে আরও থাকে রংধনুর
সপ্তরঙের উদারতা।”

তখন বায়ু করতে চাইল
আমার সাথে আলাপ,
তার তেজ্বের গতিতে
পড়েছিলো সেই ছাপ।
বায়ুকে বললাম, “ভাই, বন্ধুত্ব কী?”
বায়ু বলল, “বন্ধুত্ব হলো এক
বলশালী বন্ধন,
যার কাছে হয় আমার
গতির মোচন।”

বায়ু দিল তার পত্র মেলে,
অতঃপর সে গেল চলে।
মাঠের এক কোণে বসে একাকি,
আকাশকে বললাম, “বন্ধুত্ব কী?”
আকাশ বলল, “বিস্তর আলোকবর্ষ
দূরে থাকে নক্ষত্র,
বন্ধুত্বের শৃঙ্খল তো
সৃষ্টিজগতে সর্বত্র।”

হঠাৎ সেখানে চাঁদ আসে,
দীপ্তি ছড়িয়ে সে হাসে।
চাঁদকে বললাম,
“চাঁদ মামা, বন্ধুত্ব কী?”
চাঁদ বলল, “রূপালী কিরণের চেয়েও
উজ্জ্বল বন্ধুত্ব¡,
সেটা দেখে আমার দু-চোখ
হয় গভীর মত্ত।”

এরপর অগ্নিকে বললাম,
“জ্বলছো যে ব্যাপক তেজ্বে,
অক্সিজেনকে করেছো সঙ্গী,
বলতে পারবা, বন্ধুত্ব কী?
অগ্নি বলল, “বন্ধুত্বে থাকে ভয়কে
চূর্ণ করার বেগ,
প্রশংসার পবন ছড়ায় সেই মুগ্ধতা,
যার কাছে মাথা নত করে
আমার তেজ্বের ক্রুদ্ধতা।”

সর্বশেষে পর্বতকে বললাম,
“বিশ্বে অতিক্রম করলে তোমার
অনেক বার্ষিকী,
তুমি বলতে পারবা
বন্ধুত্ব কী?”
পর্বত বলল, “বন্ধুত্বের ব্যাখা করা
সত্যিই বড়ই কঠিন,
“বন্ধুত্বের ঐক্য যে প্রকৃতি
ধারণ করে প্রতিদিন?”

আমার প্রশ্নের উত্তর
পেয়ে গেলাম দিনশেষে,
এখন বুঝলাম প্রকৃতিও
বন্ধুত্বকে ভালোবাসে।
তাইতো বন্ধুত্ব অজেয়
হয়ে আছে ইতিহাসে।

লেখকঃ মনিরুজ্জামান শেখ রাহুল, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর। তিনি কবিতাটি তার সকল বন্ধু-বান্ধবীদেরকে উৎসর্গ করেছেন।