করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে এবার ভিন্ন আবহে শুরু হলো রোজার মাস পবিত্র রমজান। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশের আকাশে দেখা যায় পবিত্র রমজানের চাঁদ। আজ শনিবার প্রথম রোজা। আর আগামী ২০ মে দিবাগত রাতে পবিত্র লাইলাতুল কদর। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় এক মাস সিয়াম সাধনা করবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা হয়। সভা শেষে জানানো হয়, বাংলাদেশের আকাশে ১৪৪১ হিজরি সনের পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে শনিবার থেকে রোজা অর্থাৎ রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস শুরু।
গত রাতে এশার নামাজের পর নিয়ম মেনে তারাবির নামাজ আদায় এবং শেষ রাতে সেহরি খাওয়ার মধ্য দিয়ে রোজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
করোনার সংক্রমণ এড়াতে সাধারণ মানুষকে মসজিদে জামাতে নামাজ পড়া আপাতত বন্ধ রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, জুমায় কেবল মসজিদের ইমাম, খতিব ও খাদেমসহ ১০ জন এবং অন্যান্য নামাজে পাঁচজন নিয়ে জামাত হচ্ছে। তবে মসজিদে এশা ও তারাবির নামাজে ইমাম, মুয়াজ্জিন, দুজন হাফেজসহ মোট ১২ জন অংশ নেবে। বাকি সবাইকে যার যার বাড়িতে তারাবি ও অন্যান্য নামাজ পড়তে বলা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর বেশির ভাগ মসজিদেই নির্দেশনা মেনে তারাবির নামাজ পড়া হয়েছে।
এবার ইফতার মাহফিলের নামে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ‘প্রত্যেকের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করার স্বার্থে রমজান মাসে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ইফতার মাহফিলের আয়োজন বা যোগদান করতে পারবে না।’ এই নির্দেশনা না মানলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে বলেও হুঁশিয়ার করা হয়েছে।
করোনাভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এবার রাস্তার পাশে ফুটপাতে ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসতে পারবেন না দোকানিরা। জরুরি কাজ ছাড়া সবাইকে ঘরের ভেতর থাকার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
মুসলমানদের কাছে রমজান সংযম, আত্মশুদ্ধি ও ত্যাগের মাস। এ মাসে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহারসহ যেকোনো ধরনের পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে রোজা পালন করে মুসলমানরা। রমজান মাস শেষে উদ্যাপন হয় পবিত্র ঈদুল ফিতর।
সুত্রঃ কালের কণ্ঠ