ভয়ের সিনেমার মতো তাদের জীবন

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

সিরিয়ার দারাইয়া প্রথম শহর যেখানে প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়।শহরটিতে রাতে ও দিনে সমান ভাবে চলছে ব্যারেল বোমা বর্ষণ।

হাতে তৈরি উচ্চ মাত্রার বিস্ফোরক ব্যারেলে ভরে হেলিকপ্টার থেকে নিচে ফেলা হয় যার নাম ব্যারেল বোমা।

সিরিয়ার দামেস্কের কাছে দারাইয়া শহরটি বিদ্রোহিদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

তাদের শক্ত ঘাটি এই শহর।

চার বছর ধরে সাহায্য সংস্থা গুলোর তরফ থেকে কোন রকম খাবার সরবরাহ করা যায় নি এই শহরে।

বিবিসির অ্যারাবিক সার্ভিস শহরটিতে প্রবেশ করে দেখার চেষ্টা করেছে ঠিক কি পরিস্থিতি সেখানকার মানুষদের।

দারাইয়া শহরে চার বছর আগে ১ লক্ষ ৭০ হাজার লোকের বাস ছিল।

কিন্তু এখন সেখানে রয়েছে আট হাজারের মত মানুষ।

কিন্তু যারা রয়েছেন সেখানে তারা সব সময় রয়েছেন ব্যারেল বোমার আতঙ্কে।

প্রতিদিন এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছুটোছুটি করছেন তারা।

আসলাম নামের একটি ছেলে তার বাবার সাথে নিজেদের নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস গাড়িতে তুলছিলেন শহরের মধ্যে তুলনামূলক একটা নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য।

আসলামের ভাষায়, “আমাদের এখন কোন বাড়ী-ঘর নেই। সেনাবাহিনী ক্রমেই অগ্রসর হচ্ছে। তাদের সৈন্যরা সিটি সেন্টারের খুব কাছেই চলে এসেছে তাই আমরাও পালিয়ে যাচ্ছি। এত বেশি গোলাবর্ষণ হচ্ছে যে আর থাকা যাচ্ছে না”

আসলামের বাবা বলছিলেন “এখানে কাছাকাছিই একটা মাটির নীচে লুকানোর জায়গা আছে। আমরা সেখানে যেয়ে লুকিয়ে থাকি।ভয়-আতঙ্কের মধ্যে বাস করছি। আমরা ভয়ের সিনেমা দেখতাম একসময় কিন্তু আমরাই এখন সেই পরিস্থিতির মধ্যে বেঁচে আছি”

দারাইয়া শহরে এখন রাস্তার দুপাশের বাড়ি ঘর দেখলে বোঝার উপায় নেই এখানে এক সময় জনপদ ছিল, মানুষের বাস ছিল মানুষের চলাচল ছিল।

একটি স্কুল ভবন বিধ্বস্ত হয়ে দাড়িয়ে আছে- ইস্পাত আর কংক্রিটের কিছু আস্তরণসহ।

ভিতরে ঢুকে দেখা গেল ছাত্ররা ক্লাসরুমের ব্লাকবোর্ডে কোন একটা সময়ে লিখে রেখেছিল ‘এই ভাঙাচোরার মধ্যেই আমাদের ক্লাস শুরু হোক না’

সেই লেখাটিও এখনো রয়ে গেছে ব্লাকবোর্ডে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা