বেল্ট দিয়ে রোগীর স্বজনদের বেধড়ক পেটালেন আনসার সদস্যরা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোমরের বেল্ট খুলে রোগীর তিন স্বজনকে বেধড়ক পিটিয়েছেন আনসাররা। ওষুধ দিতে ওয়ার্ডে প্রবেশ করা নিয়ে তর্কবিতর্কের জেরে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতালের ৮ম তলার পুরুষ সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের একটি ভিডিও রবিবার সন্ধ্যার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে গাজীপুর শহরের সামন্তপুর এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে ইলিয়াস হোসেন (২৮) পুরুষ সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি হন। শনিবার দুপুরে তার মাথায় অস্ত্রপচার হয়। শনিবার রাত ৮টার দিকে ইরয়াসের বড় ভাই হাফেজ এমদাদ হোসেন একটি জরুরি ওষুধ কিনে ভাইকে দিতে ওয়ার্ডে প্রবেশ করতে গেলে বাধা দেয় আনসার সদস্য শাহ জালাল। ওষুধটি জরুরি জানালেও চিকিৎসকের নিষেধ আছে জানিয়ে তাকে প্রবেশ করতে দেননি।

এক পর্যায়ে জোর করে ভেতরে ঢুকে গেলে আনসার সদস্য এমদাদ হোসেনের শার্টের কলার ধরে টেনে বাইরে এনে চড়-থাপ্পর ও ধাক্কা মারেন। এমাদাদ আনসারকে পাল্টা ঘুষি দেন। ক্ষুব্ধ হয়ে আনসার সদস্য ফোনে অন্য আনসারদের ডেকে আনেন। এ সময় এমদাদ ওয়ার্ডে ভাইয়ের কাছে ছিলেন।

আনসাররা লাঠিসোটা নিয়ে এসে এমদাদকে বেদম মারধর করে। সেখানে থাকা তার মামা হাবিব রক্ষা করতে গেলে আনসাররা তাকেও মারধর করে। এক পর্যায়ে ভাতিজা হাসিব এগিয়ে গেলে কোমরের বেল্ট খুলে একাধিক আনসার সদস্য হাসিবকে ওয়ার্ডের ভেতরেই বেদম প্রহার করে। এ সময় ওয়ার্ডে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপদ আশ্রয় নিতে গিয়ে কয়েকজন রোগীও আহত হয়। ভয়ে এমদাদ ওয়ার্ডের টয়লেটে আশ্রয় নেন।

খবর পেয়ে এমদাদের বাবা, আনসার কমান্ডার মঞ্জুর ঘটনাস্থলে আসেন। কমান্ডার মঞ্জুর এমদাদকে মারধর করা হবে না নিশ্চয়তা দিয়ে টয়লেট থেকে ওয়ার্ডের বাইরে নিয়ে আসলে আনসার সদস্যরা ঘিরে ধরে আবারো পিটুনি দেয়।

রবিবার রাতে ওয়ার্ডে গেলে একজন রোগী বলেন, ফিল্মি স্টাইলে হামলা হয়েছে। ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। ঘটনার সময় কোনো চিকিৎসক রাউন্ডে ছিলেন না। তারপরও ডাক্তারের দোহাই দিয়ে রোগীর স্বজনদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ওয়ার্ডে বেশ কয়েকজন বয়স্ক জটিল ও হৃদরোগী ছিলেন। হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষীরা এভাবে রোগীর স্বজনদের ওপর হামলা চালানোয় তারা আতংকিত।

হাসপাতালের আনসার কমান্ডার মো. মঞ্জুর হোসেন জানান, রোগীর স্বজনরা আনসার শাহ জামালকে মেরেছিল। বিষয়টি রাতেই মিমাংসা হয়ে গেছে। একজন আওয়ামী লীগ নেতা মিমাংসা করে দিয়েছেন। রোগীর স্বজনরা ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়েছেন। সূত্র: কালের কণ্ঠ