বিশ্বে ইসলামি অর্থনীতির অগ্রনায়ক হতে চায় তুরস্ক

বিশ্ব ইসলামিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় তুরস্ক নেতৃত্বের স্থান দখলে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আর সেটা করতে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসলামিক ইকোনোমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সের মতো বিভাগ খোলা হচ্ছে। দেশটির বৃহৎ ঋণদাতা থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও এ বিষয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছে। এ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।

তুরস্কের ‘কোনইয়া কারাতায়’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক ইকোনোমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্স বিভাগের প্রধান হামদি দোনদুরেন বলেন, তুরস্কের বৈশ্বিক ইসলামিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অগ্রনায়ক হতে চাওয়ার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে ইসলামিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা শুধুমাত্র ইসলামিক ব্যাংকিং নয়। ইন্সুরেন্স, কোষাগার ব্যবস্থাপনা, হিসাব রক্ষণ এবং লেনদেন নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমও ইসলামিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অংশ।

হামদি দোনদুরেন বলেন, ইসলামিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পরিপূর্ণ উন্নয়ন করতে আঙ্কারার উচিত অর্থনৈতিক বিধিমালা গঠন করা। আর এটা হতে হবে ইসলামিক অর্থনৈতিক রীতি-নীতির অধীন সামগ্রিক পদক্ষেপ।

তুরস্কের এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বলেন, যদিও ইসলামি ব্যাংকগুলো সুদমুক্ত। কিন্তু সকল অর্থনৈতিক লেনদন ইসলামিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার আলোকে না করা গেলে আমাদের ব্যবসা করা উচিত নয়। এর জন্য প্রয়োজন অর্থনৈতিক চক্রে ব্যবহৃত প্রযুক্তিগত আবেদন, ইসলামি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, ইসলামি বিনিয়োগ ফান্ড এবং ইসলামি অনুভূতিসম্পন্ন মধ্যবর্তী প্রতিষ্ঠান।

ভূমধ্যসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে নেমেছে তুরস্ক। এতে সফল হলে বদলে যাবে দেশটির অর্থনীতি। ফাইল ছবি
ভূমধ্যসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে নেমেছে তুরস্ক। এতে সফল হলে বদলে যাবে দেশটির অর্থনীতি। ফাইল ছবি

তুরস্কের শিক্ষাবিদরা ইসলামিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্র ফোকাস করতে চায় উল্লেখ করে হামদি দোনদুরেন বলেন, বিশ্ব এবং তুরস্কে ইসলামিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্র একটি নতুনভাবে উন্নয়নশীল সেক্টর। বিশ্বে তুরস্ক ইসলামিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে একযোগে গবেষণা পরিচালনা করেছে। এই খাতে দেশের ঋণদাতাদের অংশগ্রহণে তুরস্কের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। আসন্ন বছরে এই ক্ষেত্রে আমাদের দেশ হবে বিশ্বে অগ্রনায়ক।

১৯৬০ এর দশকে শুরু হওয়া ইসলামিক অর্থনীতি ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে উল্লেখ করে তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক বলেন, বর্তমানে ইসলামিক অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখাতে সক্ষম হচ্ছে।

তিনি জানান, ইসলামিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মিশর , ইরানসহ উপসাগরী দেশগুলো এবং অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কাউন্সিল (ওআইসি) ইসলামিক ডেভলপমেন্ট ব্যাংকও ব্যাপক অবদান রেখেছে।

এক্ষেত্রে বিশেষভাবে তিনি গত ১৫-২০ বছরে ইসলামিক অর্থনীতি ব্যবস্থায় তুরস্কের প্রাতিষ্ঠানিক এবং আইনি বিধিমালা প্রণয়নের কথা বলেন।

উন্নত অর্থনৈতিক পরিষেবার দেশ যুক্তরাজ্য, লুক্সেমবার্গ বেশ কয়েক বছর ধরে ইসলামিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আগ্রহ দেখাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে ইসলামিক অর্থনৈতিক পণ্যে বিশেষ করে বৃহৎ বিনিয়োগ ফান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর