বিলুপ্তপ্রায় রুপ কথার গল্প কাহিনী কবিতা

ইউসুফ আলী:

গ্রাম থেকে শুরু করে শহর এলাকায় বসবাসকারী নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের একসময়ের বিনোদনের অন্যতম উপাদান ছিল রুপ কথার গল্প, ভূতের গল্প, কাহিনী কবিতাসহ লোকজ সংস্কৃতি। একসময় বাড়ির উঠানে অথবা ঘরের মেঝেতে গোল করে বসে মানুষ এসব লোকজ সংস্কৃতির আসর বসাতেন।

 

কিন্তু আকাশ সংস্কৃতির প্রভাবে এসব লোকজ বিনোদন এখন বিলুপ্তপ্রায়। এখন আর গ্রামেও বসে না লোকজ সংস্কৃতির আসর। প্রক্ষান্তরে তার জায়গা নিয়েছে টেলিভিশন।

 

  • গ্রামের চায়ের দোকানগুলোতে এখন টিভিতে চলে নানা ধরনের সিরিয়ালসহ দেশি-বিদেশি-সিনেমা। আর এসব দোকানে বসে চা-সিগারেট পান করার পাশাপাশি টিভি দেখেই বিনোদনের খায়েস মেটাচ্ছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

 
অথচ ২০-২৫ বছর আগেও নানা কল্পকাহিনী বা রুপ কথার গল্প বলে ও শুনে বিনোদনের খোরাক মেটাতেন।  পেত গ্রাম-গঞ্জের সরল মানুষগুলো। স্কুলে ছোটদের পাঠ্যপুস্তকে বিশেষত প্রাথমিক পর্যায়ে এর ছিল সরব উপস্থিতি। আর ছোটদের আবদারের মধ্যে অন্যতম ছিল গল্প বা গান শোনা।

 

গ্রীষ্মের রাতে গ্রামের উঠনগুলোতে বসত গল্পের আসর। কিন্তু এ গুলো এখন ক্রমে স্মৃতি হয়ে যাচ্ছে। এখন এ ধরনের গল্পের আসর বসেনা বললেই চলে। মায়েদেরকেও তাদের সন্তানদের গল্প শোনানোর দৃশ্য চোখে পড়ে না।

ভদ্রা এলাকায় বসবাসকারী  দুই সন্তানের মা মাতিয়া খাতুন (৪৫) বলেন, ছোট বেলায় আমরা প্রতি রাতে বাবার কাছে অনেক রকমের রুপ কথার গল্প শুনতাম এবং মজা পেতাম । নিজেও অনেক গল্প জানতাম কিন্তু এখন প্রায় সবই ভুলেগেছি না বলা না শোনার করণে।

  • বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা বোস পাড়ার আমিরুল ইসলাম তুহিন (৫০) সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, আমার ফুফু অনেক গল্প জানতেন। আমরা তাঁর কাছ খেকে গল্প শুনতাম। কিন্তু এখন এসব গল্পের কদর অনেকটা ম্লান হয়ে গেছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড : মো: জাহাঙ্গীর হোসেন সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, মানুষ এখন অনেক ব্যস্ত। পুরুষরা যেটুকু অবসর সময় পায় সেই সময়টুকু চায়ের দোকানে বসে রাজনীতির গল্পে মেতে উঠে। আর মেয়েদের অবসর সময় কাটে টেলিভিশনের সামনে বসে এবং শিশুরা আকৃষ্ট হয়ে পড়েছে কার্টুনের প্রতি। তাই রুপ কথার গল্প, কাহিনীর চর্চা আর আগের মত দেখা যায় না।

স/আর