বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা থেকে সরে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতে যেতে হবে

সরকার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরে গিয়ে এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে উল্লেখ করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে গেলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরে আসার যে উদ্দেশ্য তা বাস্তবায়ন হবে না। পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সরকারের এখনই সদ্ধিান্ত নেয়া উচিত নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়া।

আজ সোমবার ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা বর্জন : সরকারি উদ্যোগ ও কতিপয় সুপারিশ’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ অভিমত ব্যক্ত করেছে সিপিডি। গবেষণামূলক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থার গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এসময় সিপিডি’র সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান এবং নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনও বক্তব্য রাখেন।

গবেষণামূলক মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় বলা হয়, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরে এসে বিকল্প পদ্ধতি নেয়ার জন্য একটি প্রস্তাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গেছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ২২টি কয়লাভিত্তিক বিদু্যত্ প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এসব প্রকল্প থেকে ২৩ হাজার ২৩৬ মেগাওয়াট বিদু্যত্ উত্পাদনের পরিকল্পনা ছিল। এগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এগুলোতে নতুন করে বিনিয়োগে যাওয়া হবে না, এটি সরকারের অভ্যন্তরীণ অবস্থান। এ রকম একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে আমরা বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। সরকারের পুরো ব্যাপারটিকে সাধুবাদ জানাতে পারতাম, যদি কয়লা থেকে এটিকে পূর্ণভাবে ক্লিন এনার্জি যেটাকে আমরা বলি নবায়নযাগ্য জ্বালানিতে যাওয়ার ব্যাপারে নীতি সদ্ধিান্ত নেয়া হতো।

উপস্থাপনের সময় আরো বলা হয়, আমরা জানতে পারছি ভেতরে এলএনজিভিত্তিক বিদু্যত্ উত্পাদনের পরিকল্পনার কথা বলা হচ্ছে। এ জায়গাটাতে আমাদের যথষ্টে আপত্তি রয়েছে। আপত্তি থাকার কারণ এর ফলে সরকারের পরিবেশ দূষণ থেকে সরে আসা অথবা ক্লিন এনার্জিতে যাওয়ার যে নীতিগত অবস্থান, সেটি এর মাধ্যমে প্রকাশ পায় না। সুতরাং সরকারের এখনই সদ্ধিান্ত নেয়ার সময় কয়লার বদলে কীভাবে সৌরভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়া যায়। আমরা বিজ্ঞানী নই, তারপরও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি এলএনজির পরিবেশ দূষণের মাত্রা প্রায় কয়লার সমান। সুতরাং এটাকে পরিবেশ দূষণমুক্ত ভাবার সুযোগ নেই।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানানো হয়, প্রত্যাশিত বেসরকারি বিনিয়োগ না হওয়ার কারণে বিদু্যত্ উত্পাদন মাত্রাতিরিক্ত হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি বিনিয়োগের সহায়ক সরকারি যেসব বিনিয়োগ যেখানে বিদু্যতের চাহিদা সৃষ্টি হবে, সেটিও সময় ধরে শেষ করা যাচ্ছে না। সেটিও একটি বিষয়। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরকারের নীতি অবস্থানকে গুরুত্ব দেন। যখন তারা দেখতে পান সরকারের মাস্টারপ্ল্যানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রাধিকারের জায়গায় নেই, ও রকম একটি নীতিকাঠামোতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কখনো উচ্চবিনিয়োগ প্রকল্প নিয়ে আসার বিষয়ে আগ্রহ দেখেন না।

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ