বিদায় বেলায় একদিনে ৩০ জনকে বদলি করলেন স্বাস্থ্য পরিচালক

নিজস্ব প্রতিবেদক:
স্বাস্থ্য অধিপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক বিদায় বেলায় ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে একদিনে ৩০জনকে বদলি ও নিজ বেতনে পদন্নতি দিয়ে চলে যান। গত বৃহস্পতিবার অবসরে যাওয়ার আগে শেষ কর্মদিবসে পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক এ ঘটনাটি ঘটান। এ নিয়ে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে রাজশাহীতে স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে।
রবিবার সকালে বদলি স্থগিতের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন রাজশাহী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের কর্মচারীরা। অর্থের বিনিময়ে কেবল এ হাসপাতালেরই অন্তত ১২ জন কর্মচারীকে বদলি করে অন্যত্র পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি।

  • এছাড়াও রাজশাহীতে স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মকত আরো অন্তত ২০জনকে বদলি করা হয়েছে অর্থের বিনিময়ে। অর্থ নিয়ে একজন সরিয়ে তার স্থলে আরেকজনকে বদলি করেছেন পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক। এ নিয়েই মূলত ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে রাজশাহীরা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে।  

 
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে রাজশাহী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলেন, পরিচালক ও স্বাস্থ্য পরিচালক আব্দুর রাজ্জাকের এলপিআর এ যাওয়ার সময় হলে ওই হাসপাতলের সুপারভাইজার আব্দুল ওয়াহাব হেলালের মাধ্যমে ওই হাসপাতালের ১০ থেকে ১২ জন কর্মচারীদের বদলির আদেশ জারি করছেন। বদলি হওয়াদের মধ্যে অফিস সহকারীসহ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী এবং নার্স রয়েছেন।
অফিস সহকারীদের মধ্যে আলী আকবর বলেন, পরিচালক আব্দুর রাজ্জাকের চাকরীর মেয়াদ শেষ। গত বৃহস্পতিবার  তিনি অবসরে যাওয়ার আগে আমাদের ১০-১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে টাকার বিনিময়ে বদলি করে দিয়ে গেছেন।

  • তিনি আরো বলেন, আমরা ছোট জায়গায় কাজ করি। আমাদের অনেকেই রাজশাহী এবং রাজশাহীর বাইরে থেকে এখানে কাজ করতে আসি। এভাবে কাজ করে পরিবার চালাতে এমনিতেই আমাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। হঠাৎ একসাথে এতোগুলো মানুষের বদলি দিয়ে কোথায় পাঠাবে তাও ঠিক নাই।

অফিস সহকারী আশরাফ বলেন, রাজশাহী বক্ষব্যাধি হাসপাতালে আমরা অনেক বছর থেকে চাকরী করছি। পরিচালকের হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমাদের যদি বদলি করা হয় তাহলে আমাদের অন্যত্র যেতে অনেক অসুবিধার সম্মুক্ষীন হতে হবে যা বর্তমানে আমাদের জন্য কষ্টকর।’
এদিকে বদলির পাশাপাশি কয়েকজনকে নিজ বেতনে পদন্নতি দিয়েও গেছেন পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক। এদের মধ্যে পাবনা সদর হাসপাতালের একজন সুইপারকে পদন্নতি দিয়ে এমএলএসএস করা হয়েছে।

  • অভিযোগ উঠেছে, অন্তত ৩০ জনের নিকট থেকে প্রায় ৬০ লাখ টাকা নিয়ে বদলি ও পদন্নতি দিয়েছেন সাবেক পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক। এছাড়াও আরো ৩৫ জনকে পদন্নতি দেওয়ার জন্য তিনি তালিকা করেছিলেন। তবে শেষ মূহূর্তে পদন্নতি বোর্ড করতে না পেরে সেই কাজটি সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হন তিনি।

এসব বিষয়ে জানতে গতকাল সাবেক পরিচালক আব্দুর রাজ্জাকের ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বর্তমান পরিচালক আশিষ মজুমদার সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, আমি এখনো দায়িত্ব নেয়নি। রাজশাহীতে এলে বিষয়টি দেখা হবে।
স/আর