বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলায় মাঠপুলিশে সতর্কতা

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :

সরকারবিরোধী দলগুলো যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে নামতে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপি ইতোমধ্যে ২২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। সরকারবিরোধী পৃথক মোর্চা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে ৭ রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’। সরকারবিরোধী রাজপথের আন্দোলনে কোনো পক্ষ যাতে কোনো অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি রেখে আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে মাঠ পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যে কোনো আন্দোলনে সব পক্ষের লক্ষ্য থাকে রাজধানী নিয়ন্ত্রণ। অতীতের বিভিন্ন বড় বড় আন্দোলন কর্মসূচিতে এমনটা দেখা গেছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই রাজধানীর প্রত্যেক থানা পুলিশকে মহল্লাভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের (ডিএমপি) সদর দপ্তর। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ইস্যুতে যে মসজিদগুলো থেকে উসকানিমূলক

মিছিল বের হয় তার তালিকাও তৈরি করতে বলা হয়েছে। মসজিদ থেকে মিছিলকারীদের তালিকা তৈরি করে তাদের গতিবিধি নজরদারি করবে পুলিশ। কোনো ধরনের নাশকতা সৃষ্টির আগেই মানুষের জানমাল রক্ষায় তা প্রতিরোধে পুলিশ আগাম সতর্কতামূলক এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেড় বছরের কম সময় বাকি আছে। এ সময়ে সরকারকে নানা ধরনের চাপে ফেলার ষড়যন্ত্র হতে পারে। সরকারবিরোধীদের আন্দোলনে সহিসংতা ও নাশকতা সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। রাজনৈতিক ও ধর্মীয় উসকানি প্রতিরোধে স্থানীয় থানার পুলিশের পাশাপাশি অপরাধ বিভাগ ও গোয়েন্দা বিভাগকে সর্বোচ্চ থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় এক সমাবেশে বলেছেন, আমাদের প্রতিবাদের জায়গা শুধু প্রেসক্লাব নয়, ঢাকা শহরের কমপক্ষে শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা আছে সেখানেও প্রতিবাদ করতে হবে। এ আন্দোলন নিজ নিজ এলাকায় ছড়িয়ে দিতে হবে। বড় রাস্তা, ছোট রাস্তা, অলিগলি পাড়া-মহল্লায় ছড়িয়ে দিতে হবে। সব জায়গায় প্রতিবাদের ঝড় তুলতে হবে।

ডিএমপির উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন বলেন, আগুন সন্ত্রাস, রাজনীতির নামে সহিংসতা ও নৃশংসতা যারা চালায় তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। যদিও এটা চলমান প্রক্রিয়া। তবে সামনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এসব ঘটনা যাতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে এ জন্য পুলিশের কার্যক্রমও বেড়েছে। এলাকাভিত্তিক দুস্কৃতকারীদের তালিকা তৈরি করতে গোয়েন্দা কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে।

পুলিশ বলছে, রাজনৈতিক সহিংসতার পাশাপাশি সম্প্রতি কিছু রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মিছিল থেকে পুলিশের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। গত জুন মাসে রাজধানীর ঢাকা উদ্যান এলাকায় মুসল্লিদের বিক্ষোভের সময় মোহাম্মদপুর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদের ওপর হামলা চালানো হয়। আহত ওসিকে নিউরো সাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঘটনায় একটি মসজিদের খতিবসহ ১২ জনকে আটকও করে পুলিশ। এ ছাড়া বিভিন্ন ইস্যুতে পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এর পর থেকেই পাড়া-মহল্লার সরকারবিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও মসজিদ থেকে বের হওয়া ধর্মী ইস্যুতে বের করা মিছিলে নেতৃত্বদানকারীদের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান বলছে, গত সাত মাসে সারাদেশ ২৮০টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সহিংসতায় নিহত হয়েছে ৫০ জন। আর আহত হয়েছে ৩ হাজার ১৬৪ জন।

সূত্র: আমাদের সময়