বালু উত্তোলনে পদ্মায় ভাঙ্গন, পাবনায় সরঞ্জামাদি জব্দসহ গ্রেফতার ২১

পাবনা প্রতিনিধি:

পাবনার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জের বালু মহলে ৫টি ড্রেজার, ৪টি বালকেট জব্দসহ ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকেলে নাজিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব জব্দ ও গ্রেফতার করে নৌ পুলিশ। পরে সুজানগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নৌ পুলিশ।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল নৌ পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (পাবনার দায়িত্বপ্রাপ্ত) বেলায়েত হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পাবনার নাজিরগঞ্জ এলাকার পদ্মা নদীতে একটি চক্র বালু উত্তোলন ও বালি ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ৫টি ড্রেজার, ৪টি বালকেট জব্দসহ ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। নৌ পুলিশ নগরবাড়ি ঘাট তদন্ত কেন্দ্রের আইসি মইদুল ইসলাম বাদী হয়ে সুজানগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কমকতা এসআই আশরাফুজ্জামান।

তিনি আরো জানান, নদীতে বালু উত্তোলনের ফলে পদ্মা নদী পাড়ে চলতি বর্ষা মৌসুমে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ওই এলাকার শত শত ঘর বাড়িসহ হাজার হাজার বিঘা ফসলী জমি ইতিমধ্যেই নদীতে চলে গেছে। এরই প্রতিবাদ করায় ওই বালু সিন্ডিকেটের লোকজন তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। পরে তাদের একটি ডাকাতি মামলায় গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। তারা গত দেড় মাস ধরে জেলে অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম স্থানীয় জনপ্রতিনিধিও্ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন হারুন মেম্বরের ভাই শাহিন।

গ্রামবাসী অভিযোগ করেন, গত দুই বছর ধরে নাজিরগঞ্জ, চরতারাপুরসহ পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বালু উত্তোলন ও ব্যবসা করে আসছেন। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই নেমে আসে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন। অসহায় গ্রামবাসী পরে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না বলেও জানান তিনি।

মামলার বাদী নৌ পুলিশ নগরবাড়ি ঘাট তদন্ত কেন্দ্রের আইসি মইদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা অভিযান পরিচালনা শেষে সুজানগর থানায় নিয়মতান্ত্রিক ভাবে মামলা দায়ের করেছি। তদন্ত করে দেখা হবে কারা এই বালু মহালের সাথে জড়িত রয়েছেন। খতিয়ে দেখে তাদেরও শনাক্ত করা হবে বলেও জানান।

উল্লেখ্য, পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে পাবনার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নের শতাধিক বসতবাড়ি ও কয়েক শ বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

সরকারিভাবে নির্দিষ্ট বালুমহাল ইজারা দেওয়া হলেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অপরিকল্পিতভাবে নদী থেকে বালু তুলছেন। এ কারণে চলতি শুষ্ক মৌসুমে নদীর নাব্যতা কমে গেলেও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট, ভূমি অফিস ও নদীর তীরবর্তী বড় খাঁপুড়, বুলচন্দ্রপুর, হাসামপুর, কালিকাপুর, চর খলিলপুর গ্রামের কয়েক শ বসতবাড়ি ও কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমি।

স/অ