বাঘায় পদ্মার চরে কোরবানির জন্য প্রস্তত ৪০০ গরু


বাঘা প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে ১৫টি চরে জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় ২০ হাজার। এই চরে এবার প্রায় ৪০০ গরু কোরবানির বিক্রির জন্য প্রস্তত রয়েছে। উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দক্ষিনে যোগাযোগ বিছিন্ন এই চকরাজাপুর ইউনিয়ন।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সরেজমিন চকরাজাপুর ইউনিয়নের দাদপুর চরে গিয়ে কথা হয় গরুর খামারী আবু বকর মোল্লার সাথে। তিনি ৩৫ বছর ধরে গরু কিনে লালন পালন করে বিক্রি করে আসছেন। বাড়ির সাথে আবু বকর মোল্লার খামারে বাঁধা রয়েছে লাল রঙের মাঝারি আকারের ৪টি গরু। রাজশাহী সিটি হাট ও রুস্তমপুর হাট থেকে ৪ মাস আগে গরু ৪টি ৩ লক্ষ টাকায় ক্রয় করেন। মাঠের কাটা ঘাস বাদে প্রতিদিন খরচ হচ্ছে এক হাজার টাকা। তিনি ৪টি গরু ৬ লক্ষ টাকা বিক্রি করবেন বলে আসা করছেন।
এছাড়া কালিদাশখালি চরে নবু দেওয়ানের একটি গরু ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দাম হেকেছেন। নিজাম উদ্দীনের ২টি গরুর দাম চেয়েছেন ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। চরে প্রতিটি বাড়িতে গরু পালন করা হয়। পরিচর্যা করেন নারী-পুরুষ মিলে।

এ বিষয়ে দাদপুর চরের গরু পালনকারী আবদুল হালিম মোল্লা বলেন, চারমাস আগে রাজশাহী সিটি হাট থেকে ৪ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা দিয়ে দু’টি লাল রঙের গরু ক্রয় করেন। গরু দু’টি কেনার পর প্রতি দিন তার খরচ হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকা। এই হিসেবে ৪ মাসে খরচ হয়েছে ৯৬ হাজার টাকা। তিনি আসা করছেন গরু দু’টি হাটে নিলে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা বিক্রি হবে।
তবে গরু দু’টির মাংসের পরিমান ধারনা করেছেন ২৩ মণ। গরু দেখ ভাল করেন তিনি ও তার স্ত্রী রাহেলা বেগম। তাই গরুর নাম দিয়েছেন লাল বাহাদুর।

গত বছর তিনি ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে এক জোড়া গরু ক্রয় করে মাসে লালন পালনের পর ৪ লক্ষ ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলেন।

তিনি বলেন, গরুকে শুধু খাস খেতে দেওয়া হয় না। এর সাথে খইল, বুট, খেসারি, গম, মসুর ডালের ভুসি, ভুট্টা চূর্ণ করে দিতে হয়। গো-খাদ্যের দাম বেশি। খাবার ও ওষুধ মিলে গরু লালন পালনের খরচও বেড়েছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে না পারলে লাভ হবে না।

চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডিএম বাবলু দেয়ান বলেন, গরু পালনের বিষয়টি চকরাজাপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্য। চকরাজাপুর ইউনিয়নের চরের মানুষ কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বিভিন্ন জাতের গরু কিনে পালন করেন। তবে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে অনেকে অন্যত্র চলে গেছে। তাই গরু পালনের লোকের সংখ্যাও কমে গেছে। তারপর গত বছরের জরিপ অনুযায়ী এবার এই চরে প্রায় চার শতাধিক গরু ক্রয় বিক্রয় হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রোকনুজ্জামান বলেন, উপজেলায় গরু, ছাগল ও গাভীসহ খামারির সংখ্যা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার। কোরবানি যোগ্য পশু রয়েছে ১৩ হাজার ৭০০। এবার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে সাড়ে ১১ হাজার। চাহিদার তুলনায় ২ হাজার ২০০ কোরবানির পশু বেশি রয়েছে। এরমধ্যে শুধু পদ্মার চরে প্রায় চার শতাধিক গরু প্রস্তত রয়েছে।

এস/আই