বাঘায় কুপিয়ে হত্যা: অজ্ঞাত আসামিসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার ৬

বাঘা প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বাঘায় ইফটিজিং এর প্রতিবাদ করায় স্কুল ছাত্রীর মামাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা ঘটনায় অভিযুক্ত সুমনকে প্রধান আসামি করে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে এ মামলায়।

গতকাল মঙ্গলবার রাতেই বাদী হয়ে বাঘা থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত নাজমুল হোসেনের বাবা অজিজুর রহমান। মামলার পরপরই এ ঘটনায় পুলিশ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বাঘা উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নে সুলতান গ্রামের রফিজ উদ্দিনের স্ত্রী রফিজা বেগম, রানা আলীর স্ত্রী রিতা বেগম, উপজেলার লালাপুর রামকৃষ্ণপুরের আবুল কাশেমের ছেলে জিল্লুর রহমান, উপজেলার লালাপুর মনিহারপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হোসেন, আমজাদ হোসেনের ছেলে সবিজ আহমেদ ও একই গ্রামের রঞ্জিতের ছেলে নজরুল ইসলাম। 

এ বিষয়ে বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর রাতেই নিহতের বাবা অজিজুর রহমান থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সুলতানপুর গ্রামের আরজেদ আলীর বখাটে ছেলে সুমনকে প্রধান আসামি করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। তারমধ্যে মামলায় ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে ৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধান আসামি সুমনসহ বাকিদের ধরতে কয়েক দফা অভিযানও চালানো হয়েছে। এসময় রাতেই অভিযান চালিয়ে ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে পাঁচজন এজাহারভুক্ত আসামি। তবে  মূল পালাতক থাকায় তাকে এখনো গ্রেফতার করা যায় নি। বাকিদের গ্রেফতার করতে আভিযান অব্যহত রয়েছে বলেও তিনি জানান।

এদিকে বাঘা গড়গড়ি ইউপি চেয়্যারম্যান রবিউল ইসলাম রবি বলেন, উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নে সুলতান গ্রামে ১৫ থেকে ২০ জন যুবকের মটরসাইকেল আছে। তাদের মধ্যে বেশ কিছু যুবক প্রায় বিভিন্ন সময় স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের ইফটিজিং করে আসছে। তাদের বিষয়টি বারবার নিষেধ করা হলেও তারা কোন কিছু তোয়াক্কা করে না বলে তিনি অভিযোগ করেন।

উল্লেখ্য, বাঘা উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের শাহাজান আলীর মেয়ে ও খানপুর জেপি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী তাজনিন তাবাসুম বৈশাখীকে (১৫) কে একই এলাকার মোহাম্মদ ভোলা প্রামানিকের ছেলে সুমন আলী প্রায় রাস্তাঘাটে ইফটিজিং করতো। ঘটনাটি ছেলেটির পরিবারকে জানায় মেয়ের পরিবার। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে সুমন।

গতকাল মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে পাশে ওই ছাত্রী নানার বাড়িতে যাওয়ার পথে তার পখরোধ করে অকথ্যভাষায় কথা বলে এবং ইফটিজিং করে সুমন। ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে এই ঘটনাটিও তার পরিবারের লোজনকে জানায়।

বিবষয়টি সুমন আলী ও তার বাবা মোহাম্মদ ভোলাকে অবগত করা হলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে সুমন। এক পর্যায়ে সুমন আলীসহ ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল সন্ধ্যায় ওই ছাত্রীর বাবা শাহাজান আলীর বাড়ি ঘেরাও করে মারপিট শুরু করে। পরে ছাত্রীর মামা নাজমুল হোসেন এগিয়ে আসলে তাকে ধারালো হাসুয়া, চাইনিজ কুড়াল, চাকু দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে নাজমুল হোসেনকে মুমূর্ষ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেকে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।

এ ঘটনায় মেয়ের ভাই তারিকুল ইসলাম তুষারকেও মারপিট করে আহত করা হয়েছে। আহত অবস্থায় ছাত্রীর বাবা শাহাজান আলী ও ভাই তারিকুল ইসলাম তুষারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

স/অ