বাগাতিপাড়ায় জলাতঙ্ক নির্মূলের টিকায় মারা যাচ্ছে কুকুর

বাগাতিপাড়া প্রতিনিধি:

জলাতঙ্ক রোগমুক্ত করার লক্ষ্যে চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় কুকুরকে দেওয়া প্রতিষেধক টিকায় মারা যাচ্ছে কুকুর। এছাড়াও টিকা প্রদান করা কুকুরগুলোর বেশিরভাগই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে বিক্ষুব্ধ হচ্ছে স্থানীয় মানুষ। এতে টিকা প্রদান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

জানা গেছে, গত বুধবার থেকে বাগাতিপাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে দুটি করে ১০টি এবং পৌরসভায় ৫টি টিম একযোগে কুকুরকে জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু করে। ৫ দিনব্যাপী ১৫টি টিম উপজেলার রাস্তা বা বাড়িতে থাকা প্রায় দেড় হাজার কুকুরকে এ প্রতিষেধক টিকা প্রদানের লক্ষ্য নির্ধারণ করে। এ ব্যাপারে গত মঙ্গলবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্যোগে এক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে ওই টিকা দেওয়ার পর থেকে টিকা প্রদানকরা কুকুরগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এছাড়া কুকুরগুলোকে খেতে দেওয়া হলেও কিছু খাচ্ছে না। সারা শরীর ফুলে রয়েছে। এর একপর্যায়ে মারা যাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

তমালতলা বাজারের ভ্যান চালক মোজাম্মেল হক মছু বলেন, ভ্যান চালিয়ে উপার্জিত টাকা থেকে তিনি বাজারের চারটি কুকুরকে পাউরুটি, বিস্কুটসহ বিভিন্ন খাবার প্রতিদিন খেতে দিতেন। কিন্তু ভ্যাকসিন দেওয়ার পর থেকে ওই কুকুরগুলো অসুস্থ হয়। এর মধ্যে দুটি কুকুর মারা গেছে। বাঁকি দুইটিও অসুস্থ।
একই বাজারের মুরগী ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন জাম্বি বলেন, তার দোকানের আশে-পাশে দুইটি কুকুর থাকত। মুরগীর রক্তসহ বিভিন্ন নোংরা খাবার খেত। মাঝে মধ্যে তিনি কুকুরগুলিকে খাবার কিনে খাওয়াতেন। কিন্তু টিকা দেওয়ার পর দুটি কুকুরই মারা গেছে। এছাড়াও চা বিক্রেতা রিংকু জানান, হরিরামপুর গ্রামে তার প্রতিবেশির দুটি কুকুর মারা গেছে। আর তার দোকানে থাকা মা কুকুরসহ চার বাচ্চা কুকুরই অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার উপক্রম। সামনে খাবার দিলেও টিকা দেওয়ার পর থেকে খাচ্ছে না। গা ফুলে আছে। তবে গায়ে জ্বরও লক্ষ্য করা যায়নি। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জামিলুর রহমান বাবু জানান, তার বাড়িতে ৫টি কুকুরের মধ্যে তিনটিকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। ওই কুকুরগুলো সবই অসুস্থ। এছাড়া ভ্যাকসিন দেওয়ার পর থেকে কুকুরগুলো তাদের এলাকা ছেড়েছে। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, অন্যদিকে এভাবে কুকুরগুলো মারা গেলে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়ে টিকা প্রদান কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, ভ্যাকসিনের কারনে মারা গেছে কিনা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাণি সম্পদ দপ্তর বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন বলে জানান। এ বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) অভিমূণ্য চন্দ্রের মোবাইল ফোনে কয়েকবার ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি।

স/শা