বাগমারায় প্রবাসী স্বামীকে খাদ্যের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে হত্যা

বাগমারা প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামে স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রবাসী স্বামীকে খাদ্যের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। প্রবাসী স্বামীর পাঠানো টাকা আত্মসাতের জন্য স্ত্রী এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। পুলিশ অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্ত্রীকে আটক করলেও পরে অদৃশ্য কারণে হত্যার অভিযোগ আমলে না নিয়ে ইউডি মামলা গ্রহণ করে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ওই প্রবাসীর নাম শাহাদত হোসেন (৪৮)। তিনি উপজেলার বাগমারা পশ্চিম পাড়ার মৃত ওয়াহেদ বকসের ছেলে ও ইরাক প্রবাসী।

নিহতদের ছোটভাই পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ও প্রতিবেশিরা জানান, শাহাদত হোসেন দীর্ঘ দিন ধরে ইরাকে ছিলেন। গত জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশে ফিরে তিনি হোম কোয়ারেন্টাইনেই ছিলেন। এসময় বিদেশ থেকে পাঠানো টাকার হিসাব নিয়ে স্ত্রী আঙ্গুরি বেগমের (৩৬) সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে স্ত্রী তাঁর পিতার বাড়িতে চলে যান। ঈদের দুইদিন আগে তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়।

নিহত শাহাদত হোসেনের ভাইদের অভিযোগ, গতকাল রোববার রাতে স্ত্রী আঙ্গুরি বেগম খাদ্যের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাওয়ান। এর কিছুক্ষণ পর রাত সাড়ে দশটার দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে বাড়িতেই মারা যান। পরে পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

নিহত প্রবাসীর স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা আত্মসাতের জন্য আঙ্গুরি বেগম তাঁর স্বামীকে খাদ্যের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে হত্যা করেছে। এই বিষয়ে থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশ আঙ্গুরি বেগমকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়। পরে তাঁর ছেলে আনোয়ার হোসেনকে (২৫) থানায় ডেকে এনে তাঁর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ইউডি মামলা গ্রহণ করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ হত্যার অভিযোগ প্রথমে আমলে নিলেও পরে অদৃশ্য কারণে নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করে ইউডি মামলা নিয়ে লাশ মর্গে পাঠায়।

তবে আঙ্গুরি বেগম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তাঁর স্বামী গ্যাস্ট্রিকে মারা গেছেন।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান স্বজনদের কাছ থেকে হত্যার অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে শাহাদত হোসেন গ্যাস্ট্রিকে মারা গেছেন। তাই ইউডি মামলা গ্রহণ করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি নিহতের স্ত্রীকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে স্বীকার করেন।

স/আর