বাগমারায় ক্ষতি গ্রস্থ আলুচাষিরা, পাননি ক্ষতিপুরন

বাগমারা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারায় গত রবি মৌসুমের আমান এগ্রো সীড কোম্পানীর নিম্ন মানে আলুর বীজ ক্রয় করে এলাকার প্রতারিত আলুচাষিদের কোন ক্ষতি পুরন দেওয়া হয়নি। প্রতারিত কৃষকদের নিন্ম মানের বীজ দেয়ার অভিযোগে গত বছর মার্চ মাসে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা কৃষি অফিসার ও সংশ্লিষ্ট স্টোর কর্র্তৃপক্ষের সম্বনয়ে গঠিত এক বৈঠকে আলুচাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও তা এখনো পাননি তারা। এ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। আলুচাষিরা কৃষি কর্মকর্তার অবহেলা ও উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন।
উপজেলার বালানগর, সগুনা,নন্দনপুরসহ বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা জানান, আমান এগ্রো ষ্টোরে উন্নত মানের বীজ দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে আমান ষ্টোর থেকে আলুচাষিরা গত মওসুমের আলুর বীজ নেয়। নিয়ম মাফিক জমি প্রস্তুতি শেষে বীজ রোপণ করে। বীজ রোপণ শেষে পানি সেচ দেয়ার পর আলুর বীজ ১০% কিংবা ১২% গাছ গজায়। বাঁকি আলুর বীজ না গজিয়ে পচে নষ্ট হয়ে যায়। লাভের আশায় ভালে বীজের নামে নিম্ন মানের আলুর বীজে ক্রয় করে কৃষকদের মাথায় হাত পড়ে ।
বালানগর গ্রামের আলতাফ হোসেন, মোফাজ্জল হোসেন, আবেদ আলী, কিয়ামত আলী, আনিছুর রহমান, জয়নাল নজরুল ইসলাম, এরশাদ আলী, দেউলিয়া গ্রামের দুলাল হোসেন, নন্দনপুর গ্রামের ইসরাইল, সাহব আলী মোহম্মাদপুর গ্রামের ফহিম, রিয়াদসহ ৩০/৪০ জন কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সাব এজেন্ট হিসেবে উপজেলার বিনোদপুর গ্রামের রমজান আলী ও আমান কোল্ড ষ্টোরের এজেন্ট সাঁইপাড়া গ্রামের আনিছুর রহমানের মাধ্যমে এলাকায় ভালো উন্নত মানের বীজ বলে ন্যায্য মূল্যে তারা বীজ ক্রয় করে। বীজ নেয়ার পর যথারীতি আলু রোপণ কারা হলে আলুর গাছ না উঠে আলু পচে নষ্ট হয়ে যায়।
কৃষকরা জানান, আলুচাষের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও  মহাজনদের নিকট হতে সুদে টাকা নিয়ে আলুচাষে নামে। আলুর আলুর ক্ষতিতে আলুচাষিরা গত বছর ধরে সুদের টাকা গুণতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এব্যাপারে বাগমারা উপজেলা কৃষি অফিসারের ভুমিকা নিয়ে কৃষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
কৃষক আবেদ আলী জানান, ১ বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে ২০/২৫ হাজার টাকা খরচ হয। এইছাড়া জমির ভাড়া বাবদসহ অন্য খরচ দিতে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়।  এই বিরাট অংকের টাকা খরচ কি ভাবে সমাধান হবে তা নিয়ে চিন্তিত। গত বছরের ঘটনা হলেও এই বছর পুনরায় আলু চাষের সময় আসছে মনে করে কৃষকরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
কৃষকদের অভিযোগ, গত বছর মওসুমে তাদের সমস্যা নিয়ে একাধিক বার উপজেলা কৃষি অফিস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে একাধিকবার স্টোর কর্তৃপক্ষকে নিয়ে দেন দরবার হয়ে মিমাংসার সিদ্ধান্ত হয়। আলুচাষিদের ক্ষতির পরিমান নির্ণয়ে এলাকায় একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়।

 

প্রয়োজনীয ব্যবস্থা নিতে কোম্পানি আন্তরিকতার সাথে কাজ করা প্রতিশ্রুতি দিলেও কোন অজানা কারণে এখনো তার কোন সমাধান মিলেনি।
এ ব্যাপারে আমান এগ্রো ষ্টোরের এজেন্ট সাঁইপাড়া গ্রামের আনিছুর রহমান ও সাব এজেন্ট রমজান আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, বীজ বিষয়ে আমান এগ্রো কোম্পানীর মিলন স্টোরের ম্যানেজার আঃ খালেকের সাথে যোগাযোগ করে সমাধান করার জন্য কৃষি অফিস দায়িত্ব নিয়েছেন।

 

খরচের বিষয কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগর মাধ্যমে এলাকার কৃষকদের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে বিষয়টি এখনো সুরহা হয়নি।

 

এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান জানান, বিষয়টি স্টোর কর্তৃপক্ষের, আমরা বিষয়টি নিয়ে গত বছরই জেলা প্রসাশক ও জেলা কৃষি কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।

স/শ