বাগমারায় কলা চাষে আগ্রহী হচ্ছে কৃষক

শামীম রেজা,বাগমারা প্রতিনিধি:
চলতি বছরে উপজেলার সর্বত্র রেকর্ড পরিমান কলার চাষাবাদ হয়েছে। অর্থকরী ফসল কলা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন এলাকার কৃষক। বাগমারার অর্থকরী ফসল ধান,আলু, পিয়াজ, পান ও মাছ চাষের পাশাপাশি কলা চাষে ঝুকে পড়েছে কৃষক। কলা চাষ করে অর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এলাকার কৃষক ও মাছ চাষীরা। কলা চাষে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় দিন দিন কলা চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে চাষীদের।
উপজেলা কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় কলা চাষীদেও সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বাগমারার বিভিন্ন এলাকার নিচু জমি যেখানে বছরে দু’একটির বেশি আবাদ হয়না এমন জমিতে পুকুর খননের হিড়িক পড়ে গেছে। মাটি খাটা মেশিন দিয়ে অতি অল্প সময়ে এসব পুকুর খনন করা হচ্ছে। আর খননকৃত এসব পুকুরের পাড়েই রোপন করা হচ্ছে কলার গাছ। নতুন মাটি পেয়ে তরতর করে বেড়ে ওঠছে কলার গাছ।
কৃষকরা জানান, এভাবে কলা গাছ রোপন করার ফলে অতি বর্ষনে পুকুরের পাড়ের মাটিগুলো ধ্বসে পড়ছে না। কলা গাছ রোপনের ফলে পাড়গুলো মজবুত হচ্ছে এবং মাটি ধরে রাখতে পারছে। এছাড়া এক বছরের মধ্যেই কলার গাছে ফলন আসলে ওই কলা বিক্রির টাকা দিয়েই মাছের খাদ্যসহ বিভিন্ন খরচ মিটানো সম্ভব হচ্ছে। ফলে কলার সাথে মাছের চাষ এই উপজেলার একটি মডেল হয়ে পড়েছে।
এছাড়া অনেক কৃষক অপেক্ষাকৃত উঁচু জমি ও ভিটাতে কলার বাগান শুরু করেছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলা ১৬ টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌর এলাকায় বর্তমানে ১শ ৮০ হেক্টর জমিতে কলার চাষ করা হয়েছে। দিন দিন এই উপজেলার কলার চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কলার চারা রোপন করার ১১ থেকে ১৫ মাসের মধ্যে কলা গাছে কলা ধরে এবং পাকে। প্রতি বিঘা জমিতে সাড়ে তিনশ’থেকে সাড়ে চারশ’  কলার চারা রোপন করা যায়। প্রতি বিঘা(৩৩ শতক) জমিতে কলা চাষে খরচ হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। আর উৎপাদন খরচ বাদে প্রতি বিঘায় কলা চাষে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। একবার কলার চারা রোপণ করলে চারবার ফলন পাওয়া যায়। এই এলাকায় সাধারনত  চার জাতের কলা চাষ করে কৃষক। চার জাতের মধ্যে রয়েছে সবরি(মানিক), সাগর, অগ্নিসাগর, আনাজি।তবে সবরি ও সাগর করার চাহিদা বেশি।

 

মাড়িয়ার কলা চাষি আসাদুজ্জামান, হামিরকুৎসার কলা চাষী মঞ্জুর রহমান জানান, কলা তাদের কাছে অতি প্রিয় ও লাভ জনক ফসল। কলার জমিতে সাথী ফসল হিসাবে অন্যান্য ফসলও আবাদ কার যায়। তাদের উৎপাদিত কলা রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য স্থানে রপ্তানী হয়ে থাকে। এলাকার বৃহৎ কলার হ্টা হিসাবে পরিচিত তাহেরপুর, মোহনগঞ্জ ও মচমইল হাটে তারা কলার কাইন(কাঁদি) নিয়ে বিক্রি করেন।
উপজেলা কৃষি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাজিবুর রহমান জানান, দিনদিন এই উপজেলার কলা চাষীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, কলা চাষে পরিশ্রম খুবই কম। এতে খুব বেশি কীটনাশকের প্রয়োজন পড়ে না। এছাড়া কলা চাষে রোগ বালাইয়ের ঝুকি অতি সামাম্য। তার মতে কলা খুবই পুষ্টিকর ফসল। সব ঋতুতে এবং সব জমিতে এর আবাদ করা যায়।

স/শ