বাকি যেটা আছে সেটাও বিক্রি করে আসবে : খালেদা জিয়া

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশ বিক্রির অভিযোগ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, জনগণের কাছে একদিন এই সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে।

 

শনিবার রাতে গুলশানের কার্যালয়ে নিহত ছাত্রদল নেতা নূরুল আলম নূরুর পরিবারের সাক্ষাৎ শেষে খালেদা জিয়া এ কথা বলেন।

 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ এবং হাসিনার হাত শুধু বাংলাদেশের মানুষের রক্তে রঞ্জিত। হাসিনা প্রতিনিয়তই সারা বাংলাদেশের মানুষ খুন করছে, হত্যা করছে। কিন্তু হাসিনার বিচার এই দেশের মাটিতেই হবে। আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্নের জন্য সে এর মধ্যে অনেক কাজ করেছে। এখনো এদেশের কিছুই রাখেনি, সবই বিক্রি করেছে। বাকি যেটা আছে সেটাও বিক্রি করে আসবে।’

 

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘দেশ বিক্রি করেও পৃথিবীর ইতিহাসে উদাহরণও আছে। কেউ কিন্তু রক্ষা পায় নাই। ভবিষ্যতে হাসিনা মনে করে না যে যাদের কাছে বিক্রি করলাম তেনারা তাঁকে বাঁচাতে আসবে। তাঁরা বাঁচাতে আসবে না, যখন মানুষ জেগে উঠবে। এ দেশের মানুষ অলরেডি (এরই মধ্যে) ফুঁসে উঠেছে, এখন এই দেশের মানুষকে শুধু সময়ের অপেক্ষা করা, যে কখন তাঁরা রাস্তায় বের হবে এবং এই যে অন্যায়-জুলুম অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।’

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারদিনের সফরে বর্তমানে ভারতে আছেন। এরই মধ্যে শনিবার বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৩৬টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক শনিবার সন্ধ্যায় এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে গত ২৯ মার্চ রাতে পুলিশ পরিচয়ে চট্টগ্রাম নগরীর বাসা থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক নূরুল আলম নূরুকে ধরে নিয়ে যায় একদল লোক। পরদিন সকালে রাউজান উপজেলার বাগোয়ান এলাকায় কর্ণফুলীর নদীর পাশে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নূরুর লাশ পাওয়া যায়।

 

লাশ উদ্ধারের সময় নূরুর দুই হাত কমলা রঙের মোটা নাইলনের রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। পরনে শার্ট ছিল না। সেটি দিয়ে দুই চোখ ছিল বাঁধা। লাশ ছিল উপুড় করা। শরীরে জামা ছিল না। লুঙ্গি পরা থাকলেও পশ্চাৎদেশ ছিল উন্মুক্ত। পশ্চাৎদেশ ও হাতের বিশাল অংশে ছিল কালচে দাগ।

 

নিহত নূরু চার মাসের একটি কন্যা সন্তান, দুই ছেলেসহ পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর চন্দনপুরা মিনহাজ মঞ্জিলের বাসায় ভাড়া থাকতেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়ায়।

 

এই ঘটনার পর ৩১ মার্চ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ মর্গে ছাত্রদল নেতা নূরুল আলম নূরুর লাশ দেখতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করেন, ‘আমাদের অত্যন্ত প্রিয় নূরুল আলমকে তাঁর বাসা থেকে সাদা পোশাকধারী ও পুলিশের পোশাকধারী সেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে নিয়ে গেছে এবং পরবর্তী দিনে তাঁর লাশ পাওয়া গেছে। এটা হচ্ছে বর্তমান সরকারের গুম, খুন, হত্যাযজ্ঞের যে রাজনীতি তার শিকার হয়েছে অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা। চট্টগ্রামবাসীসহ বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তির সকলে আজকে শোকাহত, চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ আজ শোকাহত। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি, আমরা এর জবাব দেব শান্তিপ্রিয়ভাবে।’

সূত্র: এনটিভি