বাংলাদেশে চাকরির সার্কুলার কমেছে ৮৭ শতাংশ : এডিবি

করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী বহু মানুষ কর্মহীন ও চাকরিহীন হয়েছেন। একইসঙ্গে কমেছে চাকরির সার্কুলার ও আবেদনের হার। বাংলাদেশে ২০১৯ সালের এপ্রিলের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিলে অনলাইনে চাকরির সার্কুলারের হার কমেছে ৮৭ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি চাকরির সার্কুলার কমেছে পোশাক ও শিক্ষা খাতে। সার্কুলার কমলেও খাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে এনজিও।

শুক্রবার (২৯ মে) এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার চাকরি সংক্রান্ত শীর্ষ দুটি অনলাইন পোর্টালের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশের উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে বিডিজবস ডটকম থেকে এবং শ্রীলঙ্কার টপজবস ডটআইকে থেকে।

এডিবি বলছে, দুই দেশের এই দুটি সাইটে সবচেয়ে বেশি চাকরির সার্কুলার হয়। যদিও এ দুটো সাইট ছাড়াও দুই দেশেই আরও অনেক চাকরির বিজ্ঞাপন সম্পর্কিত সাইট রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৯ শতাংশ, যা এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ অবস্থায় ২০১৯ সালে বিডিজবস ডটকমে ৬০ হাজার চাকরির সার্কুলার হয়। এ পোর্টালে প্রতিদিন প্রায় এক মিলিয়ন পেজ ভিউ হয়।

তবে প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের তুলনায় শ্রীলঙ্কা ভালো অবস্থানে রয়েছে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিলে শ্রীলঙ্কায় চাকরির সার্কুলার কমেছে ৭০ শতাংশ। যেখানে বাংলাদেশে কমেছে ৮৭ শতাংশ।

বাংলাদেশের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের মার্চে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সাধারণ ছুটিতে যায় দেশ। আর মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে চাকরির সার্কুলার কমতে থাকে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে যে পরিমাণ চাকরির সার্কুলার হয়, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে প্রায় একই রকম সার্কুলার হয়েছিল। সেই তুলনায় ফেব্রুয়ারি ও মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত ১০ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত চাকরির সার্কুলার কমে। তবে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহের এসে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় চাকরির সার্কুলারের হার ৫৯ শতাংশ কমে যায়।

আর গত বছরের মার্চের সঙ্গে তুলনা করলে চলতি বছরের মার্চে চাকরির সার্কুলার হার কমে ৩৫ শতাংশ এবং গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিলে চাকরির সার্কুলারের হার কমেছে ৮৭ শতাংশ। যদিও গত বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চাকরি সার্কুলারের হার কম ছিল মাত্র এক শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সব খাতেই ব্যাপক হারে চাকরির সার্কুলার কমেছে। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালের এপ্রিলে তৈরি পোশাক ও শিক্ষা খাতে কমেছে ৯৫ শতাংশ, ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে ৯২ শতাংশ, স্বাস্থ্য খাতে ৮২ শতাংশ, আইসিটি খাতে ৮১ শতাংশ, এনজিওতে ৬৪ শতাংশ।

এনজিওর বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, এই খাত অন্য যেকোনো খাতের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। খুব সম্ভবত বর্তমান সময়ে উন্নয়ন সহায়তার জন্য। অর্থাৎ এতে পরিষ্কার যে, করোনার প্রদুর্ভাবে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মী নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে।

চাকরির সার্কুলার কমার পাশাপাশি স্বাভাবিকভাবে চাকরি আবেদনও কমেছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত চাকরির আবেদন প্রায় একই পরিমাণে ছিল। তবে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে তা ৭২ শতাংশ কমে যায়। চতুর্থ সপ্তাহ কমে ৩৪ শতাংশ। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালের মার্চে চাকরির আবেদন ৬৩ শতাংশ এবং এপ্রিলে ১৯ শতাংশ কমেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

জাগোনিউজ