বাংলাদেশেও শীর্ষ ব্র্যান্ড হতে চায় হিরো

‘হিরো মোটরসাইকেল ভারতে এক নাম্বার ব্র্যান্ড গত ২০ বছর যাবৎ। আগামী তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশেও এক নাম্বার ব্র্যান্ড হবে হিরো। এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি’—কালের কণ্ঠকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন এইচএমসিএল নিলয় বাংলাদেশ লিমিটেডের সিএফও অ্যান্ড কম্পানি সেক্রেটারি বিজয় কুমার মন্ডল।

তিনি বলেন, ‘২০০৯ ও ২০১০ সালের দিকে বাংলাদেশে প্রথম মোটরসাইকেল উৎপাদন শুরু করেছিল ওয়ালটন এবং রানার কম্পানি। বর্তমানে এ দেশে উৎপাদনকারী সব প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে বছরে মোটরসাইকেল উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে ১৫ লাখ ইউনিট। ২০১৪ সালে নিটল-নিলয় গ্রুপের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে কারখানা করেছে হিরো মটকর্প। প্রথম বছরে ৭০ হাজার ইউনিট উৎপাদন করা হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে হিরোর মার্কেট শেয়ার ২৪ শতাংশ। কারখানার শতভাগ ইঞ্জিনিয়ার বাংলাদেশি। আমাদের প্রত্যেক ইঞ্জিনিয়ারকে তিন মাসের জন্য ভারতে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠিয়ে থাকি, প্রশিক্ষণ শেষ করে আসার পর তাঁদের কাছ থেকে আমরা সার্ভিস নিচ্ছি। আমাদের অফিস এরই মধ্যে গ্রিন অফিস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। হিরো ভারতের ব্র্যান্ড হলেও বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি আছে।’

বিজয় কুমার মন্ডল বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে মোটরসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিতে গত বছর কোনো প্রবৃদ্ধি ছিল না। বিক্রি কমেছিল ২০ শতাংশ। যদিও গত বছর মোটরসাইকেল ইন্ডাস্ট্রির টার্গেট ছিল ছয় লাখ ইউনিট বিক্রির। আর বিক্রি হয়েছিল প্রায় চার লাখ ৭৫ হাজার ইউনিট। তার আগের বছর বিক্রির পরিমাণ ছিল পাঁচ লাখ ৫০ হাজার ইউনিট।’

তিনি বলেন, ‘গত বছর সরকার ডিউটির স্ট্রাকচারে কিছু পরিবর্তন করে, যার কারণে আমাদের দামেও প্রভাব পড়ে। মোটরসাইকেল মার্কেটের সঙ্গে দামের সম্পর্ক থাকায় যখনই আমরা মোটরসাইকেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হই, তখনই গ্রাহকদের মোটরসাইকেল কিনতে সমস্যা হচ্ছে। যেহেতু গত বছরে বেকারত্বের একটি ধাক্কা ছিল। গ্রাহকদের কেনার সিদ্ধান্তও প্রাথমিকভাবে পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতা দীর্ঘদিন ছিল। যার ফলশ্রুতিতে গত বছর বিক্রি কমে যায় ২০ শতাংশ যা পুরো ইন্ডাস্ট্রিকেই ক্ষতির মুখে ফেলে।’

তিনি বলেন, ‘গত বছর করোনার কারণে টানা ৬৬ দিন আমাদের কারখানা বন্ধ ছিল, কিন্তু আমরা একটি কর্মীকেও ছাঁটাই করিনি। তখন আমরা ফ্যাক্টরি এলাকার গরিব অসহায় ৪০০ মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। এ বছর যদিও আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব, কিন্তু করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি বাড়ার কারণে এখনো দেশে লকডাউন চলছে। তাই যেমন বিক্রির আশা করেছিলাম সেভাবে বিক্রি হচ্ছে না। তবে গত বছরের মতো খারাপ না।’

তবে তিনি রেজিস্ট্রেশনের খরচ নিয়ে খুব চিন্তিত উল্লেখ করে বলেন, ‘ভারতে রেজিস্ট্রেশন ফি পাঁচ-ছয় হাজার টাকা, কিন্তু বাংলাদেশে রেজিস্ট্রেশন ফি হচ্ছে ১২-২২ হাজার টাকা। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ১০০ সিসি মোটরসাইকেল। সেটির দাম বাজারে এখন এক লাখ টাকা। যার ১০ বছরের রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হচ্ছে ২০ হাজার টাকা। মানে দামের ২০ শতাংশই রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হয়।’

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ