বাঁধের ১০০ মিটারের মধ্যে চিংড়ি ঘের নিষিদ্ধ

উপকূলীয় তিন জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধের ১০০ মিটারের মধ্যে কোনো চিংড়ি বা কাঁকড়ার ঘের দেয়া নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

খুলনা, সাতক্ষীরা এবং বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সম্প্রতি এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

বাঁধ রক্ষায় ঘের তৈরির এই দূরত্ব নির্ধারণ করে ডিসিদের দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বিপুল পরিমাণ ভৌত ও আর্থিক ক্ষয়ক্ষতিসহ সাধারণ মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগের মুখোমুখি হচ্ছে। এ এলাকাগুলোতে লবণাক্ত পানি অনুপ্রবেশ তথা লবণাক্ত পানির ক্ষয়ক্ষতি থেকে ফসলাদি রক্ষার্থে ও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পাউবো ষাটের দশকে পোল্ডার/বাঁধ ও আনুষাঙ্গিক স্থাপনা নির্মাণ করে। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ সত্ত্বেও ঘনঘন ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট অতিরিক্ত প্রবল পানির স্রোতের কারণে পুরনো এ গুরুত্বপূর্ণ বাঁধগুলোর বিভিন্ন অংশ বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া ওভারটপিং (overtopping) সিপেজ (seepage), রিভার ইরোজনসহ (river erosion) অন্যান্য কারণে বাঁধগুলো প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে পাউবোর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করে এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিমত অনুসারে বাঁধের টো ঘেঁষে বা বাঁধের অত্যন্ত কাছে ঘের তৈরি করে স্থানীয়রা কাঁকড়া ও চিংড়ি মাছ চাষ করছে। ঘের মালিকরা বাঁধের বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র পাইপ ঢুকিয়ে অপরিকল্পিতভাবে নিজস্ব সুবিধা অনুসারে গেইট তৈরি করে পানি ঘেরে প্রবেশ করিয়ে থাকে। ফলে পাউবোর বাঁধগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বড় ধরনের জোয়ার বা জলোচ্ছ্বাসের কারণে বাঁধের বিভিন্নস্থান ভেঙে জনপদে পানি প্রবেশ করে ও ঘেরের ক্ষতি সাধিত হয়।

চিংড়িকে ওই অঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, হিমায়িত চিংড়ি দেশের উল্লেখযোগ্য একটি রফতানিমুখী পণ্য। তাই চিংড়ি চাষাবাদকেও সংরক্ষণ করা দরকার। এমতাবস্থায় সার্বিক বিবেচনায় ঘের স্থাপনের সময় পাউবোর বেড়িবাঁধ বাঁধ থেকে কমপক্ষে ১০০ মিটার দূরে ঘেরের সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। পানি প্রবেশ বা পানি নিষ্কাশনের জন্য নিকটস্থ নদী বা কাছাকাছি খালের ইনলেট বা আউটলেট তৈরি করে চাষাবাদ বা ঘের ব্যবস্থাপনা করতে হবে।

চিঠিতে এসব বিষয় সমন্বিত ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে ‘বাংলাদেশ পানি আইন’ অনুসারে ঘের মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে জেলা সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর