সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
২০১৫ সাল থেকে যুদ্ধে জর্জরিত পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইয়েমেন। তৈরি হয়েছে অভূতপূর্ব দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি। এমন পরিস্থিতিতেই সারা বিশ্বের নজর কেড়েছে একটি স্কুল।
আসুন জেনে নেই যুদ্ধে জর্জরিত পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইয়েমেন সেই স্কুল সম্পর্কে।
কেন এই যুদ্ধ?
২০১৪ সালে ইরানের সমর্থনপুষ্ট হুতি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখল করে নিলে রাষ্ট্রপতি আবেদ রাব্বো মানসুর হাদি সৌদি আরবে আশ্রয় নেন। হাদির পাশে দাঁড়ায় সৌদি আরব। ২০১৫ সালে সৌদি সমর্থনপুষ্ট জোট বাহিনী ইয়েমেনে সামরিক অভিযান শুরু করে। একসময় সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। এখন পরিস্থিতি রীতিমতো সঙ্কটজনক৷ সম্প্রতি সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, ইয়েমেনে ৫০ লাখেরও বেশি শিশু দুর্ভিক্ষের হুমকিতে রয়েছে।
কেমন এই স্কুল?
৬ থেকে ১৫ বছর বয়সিদের এই স্কুলে বিনা খরচে পড়া যায়। আদেল জানান, যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়ে যেতে থাকে একের পর এক স্কুল। নিজের সন্তানদের স্কুলটি বন্ধ হবার পর এই স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
তাইজ শহর
ইয়েমেনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর তাইজ। হুতি বিদ্রোহীরা ২০১৮ সালের শুরুতে এই শহরের দখল নেয়। ফলে গোটা শহরজুড়ে যুদ্ধের পরিস্থিতি।
ক্লাসরুমের চিত্র
দেখতে একদমই সাদামাটা এই স্কুলের নেই কোন স্থায়ী ক্লাসরুম। রংচটা দেওয়ালে, ঝুলন্ত পর্দার গায়ে অসংখ্য ছিদ্র বুঝিয়ে দেয় এই শহরের বর্তমান অবস্থা আসলেই কতটা সঙ্গীন। জানালার বদলে স্কুলটিতে রয়েছে বিশাল গর্ত।
ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহ
যুদ্ধে উড়ে গেছে কারো বাড়ি, কারো বা বাড়ির ছাদ। কিন্তু তাতেও কমেনি এই ইস্কুলে পড়তে আসা ছেলে-মেয়েদের উদ্যম৷ ১৬ জন স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষক রয়েছেন এই স্কুলে। ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের বইখাতা একে অন্যের সাথে সানন্দে ভাগ করে নেয়। বেশির ভাগ বই-ই বিভিন্ন সংস্থার দান করা।
বন্দুকের বদলে কলম
ইয়েমেনে অনেক তরুণই হাতে তুলে নিয়েছেন অস্ত্র। কিন্তু তাইজ শহরের স্কুলশিক্ষক আদেল আল-শোরবাগি নিজের বাড়িতেই খুলেছেন স্কুল। প্রতিদিন এই স্কুলে পড়তে আসে সাতশ’ ছাত্র-ছাত্রী।
কেন এত ভিড়?
যুদ্ধ শুরু হবার আগে ইয়েমেনের স্কুলগুলোতে যে পাঠ্যক্রম ছিল তা অনুসরণ করেই এখানে পড়ানো হয় বলে জানান আদেল। অঙ্ক, বিজ্ঞান ও ইংরেজির ক্লাসগুলিতে ভিড় হয় সবচেয়ে বেশি। বর্তমান ইয়েমেনে বিনামূল্যে শিক্ষাদানের জায়গা ক্রমে কমে আসার কারণে দুর্ভিক্ষে জর্জরিত তাইজের এই ইস্কুলে শিক্ষার্থীদের ভিড় আরো বাড়ছে।
বিকল্প ব্যবস্থা?
গোটা দেশে খাদ্যের অভাব চোখে পড়ার মতো। পাশাপাশি যুদ্ধ থামারও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আদেলের স্কুল ছাড়া এলাকায় আরেকটি বেসরকারি স্কুল থাকলেও তা অনেকের আর্থিক নাগালের বাইরে। তাই শত শত ছেলে-মেয়ে প্রতিদিন এই স্কুলে পড়তে আসে।