বনপাড়ায় ধানের শীষ প্রতীকে প্রচারণায় বাধা ও হুমকির অভিযোগ

বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি:
নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে প্রচারণায় বাধা, নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের হুমকি-ধামকি ও লাঞ্চনার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপি মনোনীয়ত মেয়র প্রার্থী মহুয়া নূর কচি।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বনপাড়াস্থ তার নির্বাচনী ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার প্রতিদ্বন্দী নৌকা প্রতীকের সমর্থক ও বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীদের নাম উল্লেখ করে প্রচারণায় বাধা ও হুমকি প্রদানসহ নানাবিধ অভিযোগ করেন। তিনি গণতান্ত্রিক পন্থায় প্রচার, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবী জানান।

সংবাদ সম্মেলনে মহুয়া নূর কচি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আগামী ২৮ ডিসেম্বর বনপাড়া পৌর নির্বাচনে তিনি বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী। পৌরসভার মহিষভাঙ্গা গ্রামসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিএনপি ও ধানের শীষ প্রতীকের সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তার প্রতিদ্বন্দী নৌকার সমর্থক ও চিহ্নিত নেতা-কর্মীরা ধানের শীষের পক্ষে কাজ না করা ও ভোট না দেয়ার জন্য ভয়-ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছে। তারা কয়েকটি এলাকায় ধানের শীষের পোস্টারও ছিঁড়ে ফেলেছেন। নির্বাচনের তিন দিন আগে কয়েকজন নেতা-কর্মীকে এলাকা ছাড়ারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিপক্ষ প্রার্থীর নিয়োজিত চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। এসব বিষয়ে তিনি একাধিকবার রিটার্নিং অফিসার ও স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে লিখিত জানালেও কোন লাভ হয়নি বলে তিনি জানান। মেয়র প্রার্থী মহুয়া নূর কচি নির্বাচনের কমপক্ষে ৫দিন আগে থেকে পর্যাপ্ত মিডিয়া কর্মী, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব সহ সেনা মোতায়েনের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আমিনুল হক, নলাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এড. সাখাওয়াত হোসেন, বড়াইগ্রাম থানা সভাপতি এড. আব্দুল কাদের মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হেলেনা বেগম, প্রভাষক লুৎফর রহমান, রফিকুল ইসলাম সহ স্থানীয় বিভিন্ন নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মহুয়া নূর কচি সাবেক পৌর মেয়র সানাউল্লাহ নূর বাবুর স্ত্রী ও জেলা বিএনপি’র সদস্য। তার স্বামী বিএনপি নেতা সানাউল্লাহ নূর বাবু ২০০৬ সালে পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে জয়লাভ করেন। পরে ২০১০ সালে ৮ অক্টোবর রাজনৈতিক সহিংসতায় তার স্বামী খুন হন। পরবর্তীতে ২০১১ সালের নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করে মাত্র ৪০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। তবে তিনি এই পরাজয় মেনে নেননি। তার অভিযোগ একটি কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতি হওয়ায় এমনটি হয়েছে। আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র কেএম জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ভোট যুদ্ধে তিনি অংশ নিয়েছেন। মহুয়া নূর কচির দাবি এবারে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তিনি নিশ্চিত জয়লাভ করবেন।

এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগ মনোনীত ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান মেয়র জাকির হোসেন সিল্কসিটি নিউজকে জানান, মহুয়া নূর কচির অভিযোগ ভিত্তিহীন ও অবান্তর।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহরিয়ার খাঁন জানান, নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা ও সন্ত্রাসী কোন হুমকী হয়েছে কিনা তা তার জানা নাই। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ থানায় আসেনি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন সিল্কসিটি নিউজকে জানান, নিয়মিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পর্যবেক্ষণ করছেন। সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য তিনি ও তার নির্বাচন কমিশন কার্যালয় বদ্ধপরিকর।
স/শ