বঙ্গবন্ধুকে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

শোকের মাস আগস্টের আজ ২য় দিন। মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের কালিমালিপ্ত মাস এটি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্র“ প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতকচক্রের হাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন।

শোকাবহ মাসের প্রথম দিনটি নানা কর্মসূচিতে পালন করে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী এবং অঙ্গসংগঠনগুলো। এদিন ঢাকাসহ সারা দেশে বিনম্র শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদদের স্মরণ করা হয়। আজ ২য় দিনে কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি না থাকলেও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করবে।

আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাশ্রিত রাজনৈতিক ধারাকে বদলে ফেলার কুপ্রচেষ্টা ছিল। শুধু দিক পরিবর্তন নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দর্শনাশ্রিত গতিধারা চিরতরে রুদ্ধ করে বাংলা ও বাঙালির চিরায়ত রাজনীতি, সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং ঐতিহ্যবিরোধী দর্শন চালুরও অপচেষ্টা হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকাল ছিল রাতের চেয়েও অন্ধকার। সৌভাগ্য বাঙালির যে, সেদিনের নৃশংসতা থেকে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা- শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

শেখ হাসিনা তার পিতার অসমাপ্ত কাজগুলো করতে পারছেন বলেই আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দর্শন, আদর্শকে আঁকড়ে ধরে বাঙালি জাতীয়তাবাদের পথে চলতে পারছে। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন। কার্যকরও করেছেন বিচারের রায়। স্বাধীনতাবিরোধী মহল ছাড়া এটি সব বাঙালির কাক্সিক্ষত ছিল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। তিনি বাংলার মাটি ও মানুষের পরম আত্মীয়, শত বছরের ঘোর নিশীথিনীর তিমির বিদারী অরুণ, ইতিহাসের বিস্ময়কর নেতৃত্বের কালজয়ী স ষ্টা, বাংলার ইতিহাসের মহানায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। বাঙালি জাতির পিতা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। উন্নত সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্নসারথি।

বুধবার কৃষক লীগ আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকাল সাড়ে ৩টায় ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর সংলগ্ন এলাকায় কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তিনি। বিকাল ৪টায় বঙ্গবন্ধু সমাজকল্যাণ পরিষদ আলোচনা সভার আয়োজন করে। বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শিল্পকলা একাডেমির ৩য় তলায় মাসব্যাপী বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক ও একুশে আগস্ট শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলার সংবাদচিত্র প্রদর্শন শুরু করে যুবলীগ। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী, পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদ।

দিনটি উপলক্ষে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ জাতীয় প্রেস ক্লাবে আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

এ সময় খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ’৭১-এর ঘাতকরা পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রায় কার্যকর হয়েছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে থাকা খুনিদের ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার জন্য সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং আমরা তাতে সফলকাম হব।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন। বিএনপি কখনোই সুস্থ রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তাদের প্রতিহত করতে হবে। ভবিষ্যতে সরকারি দল, বিরোধী দল সবাইকেই মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি হিসেবে কাজ করতে হবে।

এ সময় আ’লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে সরকার বদ্ধপরিকর। সরকার এ বিষয় কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছে। তাদের আবেগ আছে।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার নামে মানুষ হত্যা, আহত শিক্ষার্থীকে আবার পানিতে ফেলে দিয়ে হত্যা করা, ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীর ওপর বাস তুলে দেয়া- এটা দুর্ঘটনা নয়, এটা হত্যাকাণ্ড। এগুলো বন্ধ করতে হবে।

বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ওমর বিন আজিজ তামিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের সহসভাপতি ইসমত কাদির গামা, অধ্যাপক ফজলুল হক, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, অরুণ সরকার রানা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।